আজকে যেহেতু ইভ্যালি নিয়ে একটা হাইপ চলছে তাই আমি ইভ্যালি নিয়ে কিছু বলতে চাই।
মোটামুটি দারাজ, পিকবো ইন্টারন্যাশনাল কয়েকটি কমার্স সাইট থেকে আমার কেনাকাটা করা হয়। ২০১৮ সালে ইভ্যালি আসার পর থেকে তাদেরকে আমি অবজারভেশনে রেখেছিলাম ১ বছর। এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তাদের সাথে আমার কেনাকাটার সম্পর্ক হয় এবং ফেব্রুয়ারি মাসেই আমি প্রথম তাদের কাছ থেকে অর্ডার করি।
এ পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছুই কেনাকাটা করেছি।প রিবারের জন্য গ্রোসারি থেকে শুরু করে জুতা এমন কি কম্পিউটার। মার্চের শেষ থেকে লকডাউন, করোনার কারণে কিছু কিছু প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে এক্সট্রিম কিছু লেট হয়েছে এটা সত্য। এবং এজন্য তারা কিন্তু ঈদে এবং কোরবানে একটা বোনাসও দিয়ে দিয়েছিল দেরী হবার এপোলজি হিসাবে।
তাদের কাছ থেকে অর্ডার করা ম্যাক্সিমাম প্রোডাক্টটি আমি যথা সময়ে পেয়েছি। তবে ৩০% প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে দেরি হয়েছে। তাদের নজর দেওয়া উচিত কোনো অর্ডার যেন কোনোভাবেই ৪৫ দিনের বেশি না হয়। ৪৪তম দিনে গিয়ে ডেলিভারি দেন তারপরও আপনাদের দেয়া ৪৫ দিনের ভিতরে যাতে হয় এর এর চেয়ি কোনভাবেই যেন দেরি না হয়।
তারা আসার পর থেকে বাংলাদেশের ই-কমার্সের যে একটা ভিউ সেটা আস্তে আস্তে চেঞ্জ হচ্ছে এবং তারা আসার পর থেকে আরও কয়েকটি ই-কমার্স বাংলাদেশে এসেছে। এটি অবশ্যই ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা জন্য ভালো দিক।
তারা ৭ থেকে ৪৫ দিনের ভিতরে ডেলিভারির কথা থাকলেও কিছু কিছু প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে ডেলিভারি একটু দেরি করে এটা সঠিক। কিন্তু প্রডাক্ট কিন্তু ডেলিভারি করে থাকে। এ পর্যন্ত আমার কোন প্রোডাক্ট মিসিং হয়নি এবং রিফান্ড পেতে দেরি হলেও রিফান্ড পেয়েছি। কোন কোন অর্ডারে কয়েকটি প্রোডাক্ট যদি মিসিং হয় আমি আনবক্সিং ভিডিও করে রাখতাম এবং তাদের কাছে কমপ্লেইন করার পরে ডিফারেন্ট কিংবা প্রোডাক্ট আবার পেয়েছি । তবে আপনাকে আপনার অর্ডার এর বিপরীতে প্রোডাক্টের মিসিং কিংবা ড্যামেজ প্রেম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই আনবক্সিং একটা ভিডিও থাকতে হবে।
তাদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত আমার অর্ধশত এর বেশি অর্ডার এর মাধ্যমে কেনাকাটা হয়েছে। যেখানে সমস্যা হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টি অর্ডার নিয়ে। বাকি গুলো সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল।
এটা সত্য তাদের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছে যেটাকে ডেভলপ করা অত্যন্ত জরুরি। তাছাড়া আজকাল তারা রিপোর্ট এর মাধ্যমে অভিযোগগুলোকে অনেক দ্রুত রেসপন্স করছে যেটি আরো ভালো করা দরকার।
এবং তাদের রেগুলার শপে কিছু প্রোডাক্টের দাম রেগুলার প্রাইস থেকে বেশি থাকে। যদিও অনেকে ক্যাশব্যাক এর টাকা ব্যবহার করে কেনাকাটা করে যেহেতু এটাতে তেমনটা ক্ষতি হয় না। তারপরেও ইভ্যালি দরকার এসব বিষয়ে নজর দেয়া।
তাদের কয়েকটি সমস্যার মধ্যে একটি সমস্যা যদি (খুব চিলি বিষয়) সেটি হলো তারা তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে নেগেটিভ রিভিউ কে সহজে অ্যাপ্রুভ করে না। কাস্টমারের অভিযোগগুলোকে শুনতে চায় না।যদি তারা যদি করতো তাহলে কাস্টমার আরো ভালো সার্ভিস পেতে এবং সেটিস্ফাইড থাকতো।এবং তারা বাহিরের গ্রুপগুলোতে গিয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ করত না। যেটি তাদের অবশ্যই দরকার ছিল। তবে রাসেল ভাইয়া অনেক খোলামেলা মানুষ উনি খোলামেলা অনেক কিছুই কাস্টমারদের সাথে আলোচনা করেন যদিও বিজনেস সিক্রেট ফাঁস করবেন না এটা স্বাভাবিক ব্যাপার!! কিন্তু আমাদের উচিত একটা নতুন কোম্পানি, আমাদের দেশীয় কোম্পানি যারা কাস্টমারদেরকে কম দামে প্রোডাক্ট দিচ্ছে তাদেরকে সময় দেয়া, সংশোধনের সময় দেয়া। শুরুতে সবাই ভুল করবে ভুল করে সংশোধন করবে। তাদেরকে সে ভুল সংশোধনের সময় দিতে হবে এবং সহযোগিতা করতে হবে। ভুল গুলো দেখিয়ে দিতে হবে। যদি একই ভুল বারবার করে তাহলে সেটা অন্য কথা।
আমি নিজে একজন তাদের কাস্টমার হিসেবে তাদের শুভ কামনা করছি। তাদের সমস্যাগুলো যাতে কাটিয়ে উঠে তারা কাস্টমারের আরো কাছে আসতে পারে সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি এবং আইন-শৃঙ্খলা সহ যারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেশের আছেন তারা তাদেরকে তাদের কাজে সহযোগিতা করবেন এবং কাস্টমার যাতে তাদের অধিকার পায় সেদিকেও নজর দেবেন এবং চিন্তা করবেন বাংলাদেশে একটি কোম্পানি হিসেবে তাদেরকে সুযোগ দেওয়ার। তাদেরকে সংশোধন করার। স্টাটিং কোম্পানি হিসেবে তাদের যা যা ভুল ছিল যাতে দ্রুত কাটিয়ে উঠে। এবং ব্যক্তির স্বার্থে যাতে বাংলাদেশের গ্রোয়িং একটি কোম্পানির ক্ষতি না করে। এমনটি হলে দেশীয় উদ্যোক্তা তৈরি হবে না দেশের উন্নয়ন হবে না।ই-কমার্স বিষয়টা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে।
ইভ্যালি থেকে একজন কাস্টোমার যখন প্রথম কেনাকাটা করে সে কিন্তু তাদের সাথে যুক্ত হয়ে যায় এবং তাদের কাছ থেকে রেগুলারলি সে কেনাকাটা শুরু করে এবং একজন পরিবার এর সদস্য মত হয়ে যায়। তাই কোন কিছুতে কথার মিল থাকলে ডেলিভারিতে দেরি হয়ে গেলছ হয়তো অনেক রাগ অভিমান থাকে যা শেষপর্যন্ত মিটে যায় যেমনটি একটি পরিবারের মধ্যে হয়ে থাকে । আশা করছি তারা তাদের দুর্বলতাগুলোকে কাটিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম কি কমার্সে পরিণত হবে।
Prothom Alo
Mohammad Rassel
Kaler Kantho