ক্যাশ অন ডেলিভারি ও ভাবনা
ক্যাশ অন ডেলিভারি ও ভাবনা
আমাদের দেশের ইকমার্স এফ কমার্স সবক্ষেত্রেই পেমেন্ট মেথড এর সব থেকে বড় অংশই নিয়ন্ত্রিত হয় ক্যাশ অন ডেলিভারির দ্বারা। কিন্তু আসলেই কি ক্যাশ অন ডেলিভারি ইকমার্স ইন্ডাস্ট্রির জন্য মঙ্গলকর কিছু, নাকি ইন্ডাস্ট্রিকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে আগিয়ে নিয়ে যাবার একটা মাধ্যম এই ক্যাশ অন ডেলিভারি, ক্যাশ অন ডেলিভারি কেন আমাদের দেশে এত বেশি প্রচলিত? ব্যবসায়িক এন্ড এ এর সুবিধা অসুবিধা কোথায়? কাস্টমার এর দিক দিয়েই বা এর সুবিধা অসুবিধা কি? রাষ্ট্রের জন্য কোনটি মঙ্গল জনক কেন মঙ্গলজনক? এই প্রশ্ন গুলি নিয়ে কি আমরা আমাদের নিতী নির্ধারকরা সেভাবে ওয়াকিবহল…
ব্যবসায়িক এন্ড এর সুবিধা কি কি?
কাস্টমার এর দোরগোড়ায় যাওয়া পন্য পছন্দ না হওয়া মাত্র পন্য রিটার্ন নিয়ে নিতে পারছে এবং পরবর্তিতে তেমন কোন ঝামেলা নাই। কিন্তু ক্যাশ অন ডেলিভারি না থাকলে পন্য পছন্দ না হলে সেই পন্যের টাকা রিফান্ড করা আমাদের দেশের ডিসবার্স্মেন্ট পলিসিতে মোটেও সহজতর নয়। এক্ষেত্রে কাস্টমার আর বিক্রেতা অপক্ষা করছি আর চেস্টা করছি এক্টিং এর মধ্যে দিয়ে যেতে হত বা যে অল্প সংখ্যক এরকম ঘটনা ঘটে তার রেজাল্ট এরুপই।
শাখের করাত হিসেবে আছে ট্রাঞ্জেকশন চার্জ, আমাদের দেশের অনলাইন ব্যাঙ্কিং বা মোবাইল ফাইনান্সিং এর অবস্থা অনেকাংশেই শাখের করাত এর মত আইতে কাটে যাইতে কাটে। এজন্য ক্যাশ অন ডেলিভারিতে যাওয়া লজিস্টীক কোম্পানির সাথে চুক্তি করার মাধ্যমে এই রিস্ক অনেকাংশেই কমিয়ে আনতে পারেন ব্যবসায়ীরা।
কাস্টমার পটানো সহজ হয় মানে কনভিয়েন্স করা সহজ হয় আর কি। পছন্দ হলে দেখে টাকা দিবেন এরকম সাহস দিতে পারা পন্য নিয়ে শুরু করার পথ সহজ হয়।
টাকা সংগ্রহ করতে পারেন দ্রুত।
ট্যাক্স টুক্স ফাকি দেয়া বা হিসেব মনের মত করে সাজান সহজ হয়।
ব্যবসায়িক অসুবিধা কি কি?
- বাড়তি হিসাব সংরক্ষন করতে হয়, লজিস্টীক এর উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। কখন কে টাকা নিয়ে উড়ে যায় এই সংকায় থাকতে হয়।
- প্রমান সহকারে ট্রাকশন রিপোর্ট বানানো কস্ট সাধ্য হয়। লোন পাওয়া বা ইনভেস্ট পাওয়া কস্ট সাধ্য হয়।
- পন্য রিটার্ন এর হার বৃদ্ধি পায়।
- ফেক অর্ডার আসার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
- অনেক ক্ষেত্রে প্রোডাকশন ডিসিশান নিতে কস্ট হয়।
কাস্টমার এর অসুবিধা কি?
- পন্য নেবার জন্য সরাসরি বাসায় রেখে যান টাইপ এক্টিভিটি করতে পারেন না, হয় টাকা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হয়, নাহলে কারো কাছে রেখে যেতে হয় বা আবার আসতে বলতে হয় লেট করে।
- পন্য হুট করে চলে আসলে টাকার বন্দোবস্ত করা (খুব কম)।
কাস্টমার এর সুবিধাঃ
- চাইলাম মোবাইল পাইলাম ইট এরকম হয় না।
- নিজের মত বদলানোর স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিতে পারা যায়।
- ডেলিভারি ম্যান কে ইচ্ছা মত বসায় রাখা যায়।
- যে কোন সময় পন্য রিটার্ন করা যায়, মানে অর্ডার করেছেন ঢাকায় আপনি গেছেন বরিশাল নো প্রব্লেম ক্যান্সেল।
- অর্ডার করার পর কোম্পানি ভ্যানিস হয়ে যাওয়ার ভয় থাকেনা
- আরো আছে, নিজেরা মত দেন।
রাষ্ট্রের অসুবিধাঃ
- ট্যাক্স ট্রাকিং কস্ট সাধ্য হয়।
- লাইসেন্স বিহীন অর্থ পরিবহন নিয়ন্ত্রন করা যায় না।
- সহায়তা প্রোগ্রাম চালু করা সহজ হয় না।
রাষ্ট্রের সুবিধাঃ
- কেউ সুবিধাজনক পেমেন্ট মেথড বাস্তবায়ন নিয়ে চিল্লায় না।
- ছোট উদ্যোক্তারা এসেই ব্যবসা শুরু করতে পারে
- যখন ইচ্ছা যারে তারে ভুলের জন্য জরিমানা করা যায়।
আমার ব্যক্তিগত অভিমতঃ
আমাদের দেশে একটা স্ক্রো সিস্টেম এর পেমেন্ট মেথড গড়ে উঠা দরকার, যেখানে কাস্টমার পেমেন্ট করতে পারবে নিশ্চিন্তে। ফ্রড কেউ বা অযাচাই কৃত কোন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানিক পেমেন্ট গেটওয়ে পাবেনা। ট্রাঞ্জেকশন চার্জ হাজারে ১ থেকে ৩ টাকায় থাকবে। লজিস্টীক, পেমেন্ট মেথড এবং কোম্পানি লাইসেন্স এবং এর ব্যবহার বিশেষ নজরদারী বা গুরুত্বের সাথে পরিচালিত হবে।
আমি বিশ্বাস করি ক্যাশ অন ডেলিভারি যত কম হবে ব্যবসায়িক ভাবে ই-কমার্স তত জনপ্রিয় ও লাভ জনক হবে। লজিস্টীক সহজ হবে ।