ইভ্যালির জন্য সুখবর, পাচ্ছে সময়
ইভ্যালির বিরুদ্ধে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও কিছুটা সময় নিতে চায়। এই সময়ে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে মন্ত্রণালয়।
অপরদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইভ্যালির কাছে কিছু তথ্য জানতে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব যথাসময়ে দিতে পারেনি ইভ্যালি। আরও ছয়মাস সময় চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় দিতে পারে বলে জানা গেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে বলে মঙ্গলবার খবর প্রকাশ করেছে একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন।
সূত্র জানিয়েছে, গত ১৯ জুলাই ইভ্যালিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ইভ্যালির কাছে গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে মোট ৪০৭ কোটি টাকা দায়ের বিপরীতে ইভ্যালির কাছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা চলতি সম্পদ কেন- তা জানতে চাওয়া হয়। বাকি টাকা ইভ্যালির কাছে আছে কিনা সে সম্পর্কেও তথ্য চাওয়া হয়েছিল। টাকা না থাকলেও সেটার ব্যাখ্যাও চেয়েছিল মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, সময় চেয়ে ইভ্যালি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছে ১ আগস্ট। আবেদনটির বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এ নিয়ে আগামী বুধবার (১১ আগস্ট) প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেততৃত্বাধীন আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান। কমিটিতে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী তানজীব উল আলমও রয়েছেন। কমিটির আলোচ্য তালিকায় আছে ইভ্যালির ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত, অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলোচনা ও আরও কিছু বিষয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাওয়া চারটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছে ইভ্যালি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালির দেয়া এসব প্রশ্নের জবাব মিলিয়ে দেখছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নের জবাবে ইভ্যালি বলেছে, ‘প্রত্যেক মার্চেন্টের অর্ডারের বিপরীতে সরবরাহের বর্তমান অবস্থা যাচাই, সরবরাহকৃত পণ্য গ্রাহক যথাযথভাবে পাওয়ার নিশ্চয়তার প্রমাণ, ত্রুটিপূর্ণ পণ্যের অভিযোগ, আগের বিলের সমন্বয়সহ নানা বিষয় জড়িত। পাঁচ হাজারের বেশি মার্চেন্টের এ হিসাব সম্পন্ন করাটা সময়সাপেক্ষ।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইভ্যালি বলেছে, ‘নিরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব হবে। এ সময়ের মধ্যে ইভ্যালি আগের প্রতিশ্রুত পণ্যের সরবরাহ শেষ করার চেষ্টা করবে এবং প্রতি ১৫ দিন পর সরবরাহের অগ্রগতি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়কে জানাবে।
ইভ্যালির ব্যবসা পদ্ধতি এবং বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে ইভ্যালি বলেছে, “৩১ মে থেকে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে পণ্য সরবরাহে ‘প্রায়োরিটি ক্যাম্পেইন’ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ২ জুলাই থেকে ‘টি-১০ ক্যাম্পেইন’ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি মার্চেন্টদের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে ব্যবসা বৃদ্ধি ও আগের প্রতিশ্রুত পণ্য গ্রাহকদের কাছে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে।”
ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা এবং ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন কোনও ব্যবসা ইভ্যালি করছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইভ্যালি বলেছে, ‘নীতিমালা ও নির্দেশিকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইভ্যালি।’
বুধবারের বৈঠকে সময় চাওয়ার বিষয়টিরও সুরাহা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ‘বুধবারই প্রথম বৈঠকে বসছি। অপর মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওরা ছয়মাস চেয়েছে। দেয়া হবে কিনা তা এখনই বলা সম্ভব নয়।’