আমার দেখা দুই যোদ্ধা..
আমার দেখা দুই যোদ্ধা..
বাংলাদেশর আলোচিত দুটি অতি পরিচিত মানুষ। তাই নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নাই। ছোট করে বললে, মোহাম্মদ রাসেল, বাংলাদেশী স্টার্টআপ ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা। অন্য জন মাহবুব কবির মিলন (স্যার), বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব।
আমি দুইজনের মধ্যে বেশকিছুর মিল খুজে পেয়েছি। হয়তো আপনারা অনেকেও অনেক কিছু খুঁজে পেয়েছেন।
প্রথমত দুইজন যোদ্ধাঃ
জনাব রাসেল, যে কিনা বাংলাদেশ ইকোনোমি তথা, ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির জন্য লড়ে যাচ্ছেন। দেশি একটি ই-কমার্স কোম্পানিকে টিকে রাখে বাংলাদেশ ইকোনোমিতে অবদান রাখতে চাচ্ছেন।
.
মিলন স্যার, যে কিনা বাংলাদেশের দুর্নীতি, নিরাপদ খাদ্য সহ বেশ কিছু খাতে দুর্নীতি মুক্তের জন্য লড়াই করেছেন ও করে যাচ্ছেন। যত গুলা সেক্টরে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, কোন না কোন অবদান রেখেছেন।
দুই জনেই দেশের কিছু মানুষের কাছে বিতর্কিত বা শত্রুঃ
এই যুদ্ধ লড়তে যেয়ে মিলন স্যার দুর্নীতিবাজ ও দুষ্ট লোকদের কাছে শত্রু বা তারা বিভিন্ন ইস্যুতে উনাকে বিতর্কিত করেছেন।
.
একই রকম, জনাব রাসেলও বাংলাদেশ ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে অবদান রাখতে গিয়ে প্রতিপক্ষ কিংবা অতি মুনাফা কারী ও বড় বড় রাঘববোয়ালদের নিকট শত্রু ও মিথ্যা অপবাদ পেয়েছেন।
দুই জনে বিতর্কিত থাকলেও কোনো প্রকার প্রমাণ আজও মেলেনিঃ
জনাব রাসেলকে নিয়ে অনেক ধরনের বিতর্কিত থাকলেও গত তিন বছরের বেশি সময়েও কোন প্রকার বিতর্কের প্রমান কেউ করতে পারে নাই।
.
ঠিক মিলন স্যারকে নিয়ে অনেকে বিতর্কিত করলেও তার সততার বিন্দু মাত্র ফাটল ছিল তা কেউ প্রমাণ করতে পারে নাই।
ইভ্যালির ইসুতে দুই জন একই পদেঃ
ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন গ্রেপ্তারের পর, মলিন স্যারকে হাইকোর্ট গঠিত বোর্ডের এমডি পদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
.
যে পদের আগে জনাব রাসেল ছিলেন।
ইভ্যালির ইসুতে দুই জনকে কঠিন কাটগড়া পোড়াতে হয়েছেঃ
জনাব রাসেল প্রথম দিকে ঠিক থাকলেও শেষ দিকে পণ্য ডেলিভারি ইস্যুতে গ্রাহকের নিকট চরম ধৈর্যের পরীক্ষা ও গ্রাহকদের কাটগড়া মুখোমুখি হয়েছে।
.
ঠিক মিলন স্যারও বোর্ডের দায়িত্বের সুবাদে, বিভিন্ন ইস্যুর জন্য ইভ্যালি গ্রাহকদের আক্রমনে পড়েছেন।
(এখানে দুজন আক্রমনের পড়লেও কারণ কিছুটা ভিন্ন ছিল, যেমন জনাব রাসেল পন্য ডেলিভারি জন্য আক্রমনে পড়তেন। মিলন স্যার আক্রমনে পড়তে বোর্ডের কার্যক্রম এর আপডেট এর জন্য।)
আবার দুইজনের প্রতি আক্রমণ ভুলে গিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করতে বিন্দুমাত্র আপত্তি কিংবা দেরি করে না ইত্যাদি গ্রাহকেরা।
.
যেমন, ইভ্যালি পন্য ডেলিভারি কিছুটা দেরি হলেও আক্রমণ পড়তেন জনাব রাসেল, ঠিক দেরিতে হলেও সঠিক পন্য পেয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতেন সেই একই গ্রাহকরাই।
.
একই ভাবে, মিলন স্যার কিছু গ্রাহকের অক্রমণের শিকার হলেও, ইভ্যালিকে বাঁচিয়ে রাখার আশ্বাস পেতে স্যারের প্রশংসার কমতি রাখছেনা সেই একই গ্রাহকেরা।
ইভ্যালির জন্য দুই জনের একই বক্তব্যঃ
কোম্পানি বাঁচিয়ে রাখলে গ্রাহক/সেলার অর্থ ফেরত পাবে।
– বোর্ডের এমডি, মাহবুব কবির মিলন।
.
কোম্পানি আবার সচল করতে চাই গ্রাহক/সেলার সেলারদের অর্থ ফেরত দিতে।
– ইভ্যালির এমডি, মোহাম্মদ রাসেল।
ইভ্যালির জন্য দুই জনের আরেকটা বক্তব্য মিল আছে,
আমার বাবার শেষ সম্বল বিক্রয় করে হলেও আমি কোম্পানি(ইভ্যালি) টিকিয়ে রাখবো।
– ইভ্যালির এমডি, মোহাম্মদ রাসেল।
.
আমার শেষ বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমি কোম্পানিকে(ইভ্যালি) সচল করার চেষ্টা যাবো।
– বোর্ডের এমডি, মাহবুব কবির মিলন।
দুইজন ব্যক্তিকে আমি ভালোবাসি, কারণ দুইজনের মধ্যে এক অদ্ভুত ধরনের মোটিভেশন পাওয়ার আছে। যা দিয়ে দুইজন ব্যক্তি তাদের বিশ্বাস ও ভালবাসা অর্জন করতে পারেছেন।
.
দুইজন ব্যক্তির সাথে আমার ব্যক্তিগত ভাবে খুব কম সময় জন্য দেখা হয়েছে। তার থেকে বেশি সময় মোবাইল/অনলাইনে যোগাযোগ ছিল। সামনে গিয়ে যখন কথা বলতে যাই, তখন অনেক কথা হারিয়ে ফেলি। যেমন আপনি বাহির থেকে অনেক কিছু বলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে গেলেন, দুইজনের সামনে গিয়ে চাইলেও বলতে পারবেন না। এটাও হয়তো তাদের সততা, বিশ্বাস কিংবা মোটিভেশন পাওয়ার কাছে আমার কিংবা আমাদের ভালবাসা, শ্রদ্ধা।
জনাব মাহবুব কবির মিলন স্যার, আপনারা বিশ্বাস করেন ইভ্যালি সময় পেলে ঘুরে দাঁড়াবে, ঠিক ইভ্যালি লক্ষ গ্রাহক সেটাই বিশ্বাস করে। শুধু ইভ্যালির গ্রাহকের চাহিদা ইভ্যালিকে বাঁচিয়ে রাখা নয়, ইভ্যালিকে বাঁচিয়ে রাকতে হবে ইকোনোমির স্বার্থে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বার্থে।
আর বিনিয়োগ নিয়ে আসার জন্য জনাব রাসেলকে মুক্তি দিয়ে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ইভ্যালিকে কিছু দিন সঠিক ভাবে ব্যবসায় করার সুযোগ দিতে হবে। আপনি বলেছেন, ইভ্যালি বন্ধ হলে কেউ এক টাকাও পাবে না। আজ যুদ্ধটা শুধু টাকা জন্য নয়, দেশীও স্টার্টআপ কোম্পানি জন্য।
© Moftachim Billah Nahid