Saturday, November 23, 2024
BusinessE-CommarceEvaly

ইভ্যালীর আদ্যোপান্ত

ইভ্যালী কিভাবে "এত্ত" ছাড় দেয় তার সম্ভাব্য ব্যাখ্যা

ইভ্যালী কিভাবে “”এত্ত”” ছাড় দেয়? ইভ্যালী আসলে “”এত্ত”” ছাড় দেয় না।

         প্রথমে উদাহরন দিয়ে নেই ধরুন একটি প্রোডাক্টের “এম আর পি” ১০০ টাকা। অফলাইনে, দোকানে বা শপে এই প্রোডাক্ট কখনোই এমআরপিতে বিক্রী হয় না। বিক্রী হয় ৯০/৮৫ টাকায়, প্রোডাক্ট টু প্রোডাক্ট এই বিক্রয়মূল্য Vary করে। ধরলাম দোকানে এটা বিক্রী হয় ৮৫ টাকায়। কিন্তু ইভ্যালী তার যেসব প্রোডাক্ট এ ছাড় দেয় সেসব প্রোডাক্ট কখনোই এম আর পি থেকে কম না বরং এম আর পিতেই বিক্রী করে (কিছু ক্ষেত্রে সেলারের দুনম্বরীতে এম আর পি থেকেও বেশিতে, কিছু ক্ষেত্রে ইভ্যালীও দু নম্বরী করে নিজে সেলারের রিটেইল প্রাইস থেকে দাম বাড়িয়ে ক্যাশব্যাক দেয়) । অর্থাৎ দোকানে যে পন্য ৮৫ টাকায় পাওয়া যায় সেটা ইভ্যালী ১০০ টাকাতেই বিক্রী করে তার উপর ছাড় দেয়। এখন দোকানে দোকানদার যেই পন্য ৮৫ টাকায় বিক্রী করে সেটা তার কেনা থাকে মিনিমাম ৭০/৭৫ টাকায় এখন ইভ্যালী বেশিরভাগ প্রোডাক্ট ডাইরেক্ট সোর্স বা বাল্ক এ্যামাউন্টে কেনায় দোকানদার যে প্রোডাক্ট ৭০/৭৫ এ কিনে সেটা ইভ্যালী ৬০ টাকায় অনেক ক্ষেত্রে ৫০ টাকাতেও কিনতে পারে, ইভেন রাসেল সাহেবের ভাষ্যমতে আরো অবিশ্বাস্য কমে, কারন এখান্য ম্যানুফেকচারার এর ইনভেন্টরি কস্ট কমে আসে। সহজ উফাহরন দেই আপনি যে আলু ঢাকায় ২০ কখন ৪০/৫০ টাকা খান সেটা কৃষক সর্বোচ্চ যখন দাম সবচেয়ে বেশি থাকে তখন ও ৭/৮ টাকা বেশিতে বেছে না। রাসেল সাহেব ডাইরেক্ট কৃষক থেকে এনে আপনাকে দেন। এই চেষ্টা এতদিন অনেক করলেও পারেনাই, অনেক ঝামেলার কারনে, ইভ্যালী সেটা প্রায় পারছে। তাহলে ইভ্যালী যেই প্রোডাক্ট ১০০ টাকা এম আর পিতে বিক্রী করছে এবং ১০০ টাকায় ১০০% মানে ১০০ টাকা ক্যাশব্যাক দিচ্ছে সেটা ইভ্যালীর কেনা পরছে ৬০ টাকা (সব ক্ষেত্রে ক্যাশব্যাক ১০০ টাকা থাকে না ৪০/৫০% ও থাকে)।

আবার এই ১০০ টাকা ক্যাশব্যাক দিয়ে যখন ক্রেতা অন্য কিছু কিনছে মানে সেকেন্ড টাইম বাই করছে তখন সেখানে থেকেও ইভ্যালী আবার ২০% কমিশন নিচ্ছে। ক্যাশব্যাকের টাকাও কাস্টমার আজ পেয়ে কাল খরচ করছে এমন না। কখনো কখনো এই ” ভার্চুয়াল টাকা” (মূলত এটা সেকেন্ড টাইম বায়িং এর উপর ডিস্কাউন্ট, ক্যাশব্যাকের টাকা আসলে কোন টাকা না) সে ৩/৪ মাস পরেও খরচ করছে। আর ইভ্যালী এই ফাকে যে ৪০% টাকা লাভ করছে এবং সেলার এর টাকা ও ডেলিভারী দেয়ার অন্তত ১/২ মাস পরে পেমেন্ট করছে (যেটা স্বাভাবিক বিজনেস টার্ম) এর মধ্যে এই টাকাটা কোথাও খাটিয়ে আরো ১০% প্রফিট জেনারেট করতে পারে।

তাহলে এখানে মূল ডিস্কাউন্ট ১০০ টাকা ক্যাশব্যাক পুরোটা না বরং ১০০- [৪০ (প্রফিট) + ২০(সেকেন্ড টাইম বায়িং কমিশন) +১০ (সার্কুলেটিং প্রফিট)] = ৩০ টাকা।

প্রোডাক্ট ভেদে এই মূল ছাড় ৩০ টাকা বা পারসেন্ট থেকে কম ও হতে পারে বেশিও হতে পারে। এখন আপনি দেখেন এখানে অনেক টেকনিক এপ্লাই করে ৩০ টাকা কাস্টমার ১০০ টাকা হিসেবে দেখছে এবং ইভ্যালী থেকে কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পরছে। এটাই মার্কেটিং এটাই স্ট্র‍্যাটেজি যা হরহামেশা সবাই করছে। নিউমার্কেটেও ওরা যে প্রোডাক্ট বেচবে ২০০ টাকায় সেটার দরদাম শুরু করে ২০০০ থেকে। সাইকোলজিকাল খেলে। এই মারপ্যাচ না থেকে যদি শুধু বলা হত ৩০% ছাড় তাহলে আজকে এই হাইপটাও এত বাড়ত না, ইভ্যালীর সেলস ও এত্ত বাড়ত না, কেউ ইভ্যালীর পেছনেও লাগত না।

আমার কাছে এই ৩০% ছাড়কেও আসলেই কোন ছাড় বা কোন লসই মনে হয় না। কারন এই জাস্ট ৩০ টাকা ইনভেস্ট করে ইভ্যালী প্রথমত ইভ্যালী কে দাড় করিয়েছে। এরপর ইভ্যালী এই ক্যাশব্যাক সিস্টেম দিয়ে আরো অনেক গুলো সেক্টর দাড় করিয়ে ফেলেছে জাস্ট এ্যাপ ডেভেলপ করে। কোন আলাদা ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই শুধু তার কাস্টমার বেস কে ইউজ করে। এখন কাস্টমার নগদে প্রোডাক্ট কিনে আর ক্যাশব্যাকের টাকা খরচ করতে গিয়ে এই সেক্টরগুলো দাড় করিয়ে দেয়। এত গুলো আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান আপনি যদি ইনভেস্ট করে তৈরী করতেন তাহলে আপনার কত খরচ হত? ইভ্যালী জাস্ট এই ক্যাশব্যাক সিস্টেম দিয়ে জাস্ট এই ৩০ টাকা দিয়ে নিচের এই সবগুলা সেক্টর দাড় করিয়েছে দেখেন-

  1. efood (like foodpanda,hungrynaki)
  2. ebazar (like com)
  3. e grocery (chaldal)
  4. e swapno
  5. e meena bazar
  6. e bengal meat
  7. e pharmacy (like lazz pharma)
  8. e fish & meat
  9. e fashion

অভূতপূর্ব অসাধারন জিনিয়াস আইডিয়া! আমি লুজার যে আমার মাথায় এমন আইডিয়া আসে না! এখানে হিংসাপ্রবন হওয়া তো আমার ছোটলোকী।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ৩০ টাকা ইভ্যালী কি একজন থেকে নিয়ে আরেকজনকে দিচ্ছে এবং এই কারনেই ডেলিভারী ঠিকমত দিতে পারছে না? নাকি এটা তারা ইনভেস্ট করছে।

এখানে দুটো বিষয় হতে পারে। ইভ্যালী কাস্টমারের টাকা অগ্রীম নিয়ে এবং সেলারের টাকা পরে দিয়ে যে গ্যাপ তৈরী হচ্ছে, সেই গ্যাপ থেকে এই ৩০ টাকা খরচ করছে।

আর নাহয় এটা হতে পারে যে

     ১/ রাসেল সাহেবের সারাজীবনের সঞ্চয়
     ২/ রাসেল সাহেবের ব্যাক্তিগত লোন
     ৩/ রাসেল সাহেবে ” Kidz” এর আমদানীকারক। যেটা বাংলাদেশের ওয়ান অফ দা টপ ডায়াপার ব্রান্ড, এবং অন্যান্য আরো বিজনেসের লাভ।
     ৪/ ইতিমধ্যেই পাওয়া টার্কিশ ইনভেস্টমেন্ট ( শুনেছি)
     ৫/ আরো ডিরেক্টরদের ইনভেস্টমেন্ট
     ৬/ ইভ্যালী ওভারঅল লাভ না করলেও ইতিমধ্যেই অনেক প্রোডাক্ট থেকে লাভ পাচ্ছে।
     ৭/ ইভ্যালীর সাথে এখন দেশের অনেক বড় কোম্পানী ব্যাবসা করছে, যারা রিয়েল বিজনেস করেন তারা জানেন, বিজনেসে বড় বড় প্রতিষ্ঠাগুলো কোটি কোটি টাকা বাকি দেয়। এভাবেও অনেক গযাপ তৈরী হয় । এবং এটা লিগ্যাল।

এই সব সেক্টর থেকে উনি দিচ্ছেন। ডিস্কাউন্ট আসলেই ১০০ টাকা হলে উপরের ৬ টা ক্যাটাগরি থেকে এত টাকা দেয়া অসম্ভব ছিল। কিন্তু আমি দেখিয়েছি ডিস্কাউন্ট আসলে মাত্র ৩০ টাকা যা একটা মাদার কোম্পানী “evaly” এবং বাকি আরো প্রায় ৯/১০ টা সাব সেক্টর এর এস্টাব্লিশমেন্ট কস্ট বা কাস্টমার একিউজেশন কস্ট হিসেবে একেবারেই নগন্য এই টাকা তারা নিজেরাই ইনভেস্ট করতে পারেন বলে ধারনা।

ইভ্যালী অনেক উপায়েই কাস্টমারকে ছাড় দেয়, আমি শুধু একটা এংগেল ব্যাখ্যা করেছি। সব ধরে ধরে লেখা সম্ভব না।

 

এবার শর্টে কাস্টমারের প্রব্লেম গুলো নিয়ে বলি।

          ১/ ইভ্যালীর যেইভাবে গ্রোথ বেড়েছে সেইভাবে ইভ্যালীর ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপ করে নাই।

          ২/ ইভ্যালী খুব সুন্দর করেই তার মার্কেটিং সাজিয়ে অর্ডার এনেছে, কাস্টমার বেস যেটা ইকমার্স ব্যাবসায় সবচেয়ে বড় শক্তি সেটা এনেছে। কিন্তু অর্ডার পরেছে স্টকে থাকা ১০০ এর পরিবর্তে ৫০০/৬০০। বেশিরভাগ প্রোডাক্টের ক্ষেত্রেই এমন হয়েছে। পরে এই স্টক আবার প্রোডাকশন করে বা ইমপোর্ট করে কাস্টমারকে দিতে দিতে অনেক লেট হয়ে যাচ্ছে।

          ৩/ অভিযোগ হচ্ছে তাহলে স্টকের বাইরে অর্ডার নেয় কেন। ঘাটতি বাজেটের অর্থনীতি যারা জানেন তারা এটা সহজেই বুঝবেন। প্রতি বছর আমাদের দেশে আয় যা হয় তার চেয়ে বেশি ব্যায় ঘোষনা হয়। ক্যাপিটালিজমের একটা থিউরি হচ্ছে একজনের বেতন ৫০ টাকা হলে সে যদি ৭০ টাকা খরচ করে এতে তার উন্নয়ন হবে। কারন সে বাকি ২০ টাকা লোন করবে আবার সেই লোন ফিল আপ করতে গিয়ে বেশি কাজ করবে, এভাবে ক্যাপাসিটি বাড়বে। ইভ্যালীর ক্ষেত্রে উত্তর হচ্ছে এটা প্রচলিত ইকমার্স না। তার সিস্টেমে বেশি অর্ডার ই হচ্ছে তার প্রান। যদিও ইভ্যালী বলে তাদের এ্যাপের সমস্যার কারনে তারা স্টক এর বাইরে যেন অর্ডার না করা যায় এটা করতে পারেনা। কিন্তু এটা হাস্যকর মিথ্যা। আসলে বেশি অর্ডার এবং বেশি অর্ডার দেখিয়ে ম্যানুফেকচারার এর কাছ থেকে বেশি কম দামে প্রোডাক্ট কিনে সেটা হিউজ ডিস্কাউন্ট দিয়ে কাস্টমারকে বিক্রি করাই ইভ্যালীর ব্লাডলাইন। তাই সে যত পারবে তত অর্ডার নিবে। প্রোডাক্ট বানিয়ে দিবে বা লোকাল মার্কেট থেকে সোর্স করে দিবে বা চায়না থেকে আনিয়ে দিবে। বা এক মডেলের বদলে আরেক মডেল দিবে বা রিফান্ড করবে। বাট সে অর্ডার কম নিবে না।

          ৪/ এত বেশি অর্ডার পরছে যে সেই তুলনায় সার্ভিস দেয়া যাচ্ছেনা। ইভ্যলীতে সাধারনত সব অরিজিনাল অফিশিয়াল প্রোডাক্ট পাওয়া যায়, এটা এস্টাব্লিশড। বাট কোন কারনে কোন কাস্টমার যদি ভাংগা প্রোডাক্ট পায়, বা সেলার বা কুরিয়ার কোম্পানী উল্টাপাল্টা করে তাহলে সেটার সমাধান পেতে জান বের হয়ে যায় বা পাওয়া ই যায় না।ধরুন একটা কোম্পানী অনেক ভাল ফিডব্যাক পাবে জেনেও সর্বোচ্চ কতজন কাস্টমার কেয়ার ইনিশিয়ালি নিয়োগ দিবে? ৫০ জন? এখন ইভ্যালীর গ্রোথ ডিমান্ড করে এই মূহুর্তে কাস্টমার কেয়ারে লোক লাগবে ১৫০০ জন। ওভার নাইট এত লোক নিয়োগ দেয়া এবং দিলেও এদের ট্রেনিং এবং মেকানিজম সেট করা যায় না। এখন সার্ভিস ওভারনাইট দিতে পারছে না বলে অর্ডার কম নেয়া যায় না। কারন ঐ যে ব্লাডলাইন ই অর্ডার।

          ৫/ এছাড়া ইভ্যালী একসাথে অনেক কিছুতে হাত দিয়েছে টেকার স্বার্থেই। কিন্তু সেই তুলনায় দক্ষ জনবল নাই। কারন আমাদের দেশে ইকমার্স ই নতুন। রাসেল সাহেব সবাইকে শিখিয়ে পরিয়ে নিচ্ছেন। ট্রায়াল এ্যান্ড এরর বেসিসে আগাচ্ছেন।

কিছু উদাহরন

          ১/ ওয়ান প্লাসের ক্ষেত্রে , হাজার হাজার মোবাইল অল্রেডি বিক্রী হয়ে গেছে কিন্তু মোবাইল এখনো শিপে, এই মোবাইলগুলো ডাইরেক্ট শিপ থেকেই কাস্টমারের কাছে চলে যাবে। এখানে যে কত টাকা সেভ হয় তা চিন্তাও করা যায় না। তাই ম্যানুফেকচারার বা ডিস্ট্রিবিউটর অনেক কমে ইভ্যালীকে দেয়।

          ২/ ওয়ালটন এর ক্ষেত্রে এমন ঘটেছে যে হাজার হাজার টিভির অর্ডার পরেছে কিন্তু টিভিই বানানো হয় নাই এখনো, কাচামাল আছে। এই টিভি বানিয়ে ওয়ালটন ডেলিভারী করেছে, এতেও তাদের অনেক টাকা প্রায় ৩০/৪০% সেভ হয়, এবং ইভ্যালী ও অবিশ্বাস্য কমে পায়।

          ৩/এম কে ইলেকট্রনিকস একদিনে ইভ্যালীর মাধ্যমে ১২ কোটি টাকা কয়েক ঘন্টায় সেল করেছে। যা অফলাইনের ওর সব আউটলেট মিলিয়েও আন ইমাজিনেবল। তার টাকা যেখানে ৩/৪ মাসে সার্কুলেট হত, ওয়ারহাউজ, শোরুম, কর্মচারীতে এই একই পরিমান পন্য বিক্রী করতে তার যে সময় ও টাকা লাগত সেটা ইভ্যালী নাই করে দিয়েছে। এখন এজন্য এম কে ইলেকট্রনিকস কি ইভ্যালীকে পরেরবার অবিশ্বাস্য ছাড় যেটা সে আর কাউকে দেয় না সেটা দিবেনা?

          ৪/ Hero কোম্পানীর একটা মটরসাইকেল ছিল Achiever 150cc। অনেক দিন ব্যাকলগে পরে ছিল। কেউ কিনতেসিলো না। খুবই বাজে মটরসাইকেল, বুইড়া বুইড়া লুক। হিরো একসাথে সব মটরসাইকেল ইভ্যালী কে দিয়ে দেয়। ইভ্যালী প্রায় ৫০০ এর মত এ্যাচিভার কোনটা ৮৫ হাজার কোনটা ৬০ হাজারে বিভিন্ন অফারে কাস্টমারের কাছে বিক্রী করে দেয়। ইভ্যালীর সি ই ও বলেছেন যে তারা সব কিছুতে সমান সমান বা লাভ করতে চেষ্টা করলেও, মটরসাইকেলে বা গাড়িতে পারেন না কারন এখানে মার্জিন অনেক কম। মটরসাইকেলে এত্ত ছাড় দিয়ে লস দেবার কারন হচ্ছে উনি যদি ৫/১০% ছাড় দিতেন তাহলে এটা মার্কেটে কোন ঝড় তুলত না। কিন্তু উনি ইনিশিয়ালি বিজ্ঞাপনে কোন টাকাই খরচ না করে (প্রথম এক বছর) পুরো মার্কেটিং এর টাকা ঢেলেছেন মটরাসাইকেল আর মোবাইল দেয়াতে। এতে করে উনি ওনার ফল ও পেয়েছেন মাউথ টু মাউথ ইভ্যালীর হিউজ আস্থার মার্কেটিং হয়েছে এবং তার এক বিশাল ফলোয়ার বেইজ তৈরী হয়েছে। বাট আমার ধারনা অন্য মটর সাইকেলে ইভ্যালী লাভ না করলেও হিরো এ্যাচিভারে লাভ করেছে। এটা ইকমার্সের বা অফলাইনের ও অনেক ওয়াইডলি ইউজড টেকনিক “স্টক ক্লিয়ারেন্স”। এবং ইভ্যালী সেটা প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই সফলভাবে করেছে। যেমনঃ টিভিএস এর এ্যাপাচের হলুদ ভার্সন বা দামী মটরসাইকেল যেমন পালসারের সিংগেল ডিস্ক ভার্সনগুলো অফলাইনে স্লো চলে, উনি ছাড় দিয়ে এই ভার্সন গুলো হিউজ ভাবে চালিয়ে দিয়েছেন।

ইভ্যালী থেকে কি আসলেই কাস্টমারের লাভ হবে?

রাসেল সাহেবের ভাল ব্যাবসা বুঝেন, অনেক ভাল নেগোশিয়েটর। উনি ওনার ব্যাবসা তার থিমে বাস্তবায়ন করতে পারলে, মধ্যসত্তভোগী এবং ইনভেন্টরী কস্ট কমিয়ে নিয়ে এসে আসলেই একসময় কাস্টমারকে অনেক কমে পন্য দিতে পারবেন। এতে কাস্টমারের লাভ হবে। কিন্তু আরেক দিক থেকে দেখলে লাভ হবে না কারন, মানুষ কমে পেলে কনজিউম বেশি করে, যেটা তার দরকার নাই সেটাও। যেমন ইভ্যালীতে সাধারন কনজ্যুমার এর সাইকোলজি নিয়ে খেলাটাই যদি মার্কেটিং এর একটা অংশ হয় তাহলে ইভ্যালী এই খেলাতে মেসির মত। ইভেন এভাবেও বলা যায় রাসেল সাহেবের এক্সিকিউশন অনেক ক্ষেত্রেই “অভূতপূর্ব্য”। অভূতপূর্ব্য বলতে আমি এটা বোঝাতে চাচ্ছি যে ইভেন “জ্যাক মা” বা ” জেফ বেজোস” ও এমন কিছু করে নাই। করে নাই বলতে এমন হতে পারে তাদের প্যাটার্ন বা ওয়ে টাই আলাদা, বা এটা হতে পারে যে জেফ বেজোস বা জ্যাক মা এটা জেনেও করছে না, বা তাদের ঐ মাথাই নাই, বা ঐ দেশের কাস্টমার এইসবের জন্য রেডি না বলে তারা করেনা। আমি জানি স্বল্প বুদ্ধির মানুষজন আমার এই বোল্ড স্টেটমেন্টের জন্য হাসাহাসি করবে, বাট আই ডোন্ট কেয়ার। ইভ্যালী টিকে থাকলে ও নিজে থেকে অনেক টাকা নিয়ে ভেগে না গেলে তারা তাদের এই মেথড বাস্তবায়নে সফল হলে পজিটিভলি পাঠ্যসূচিতে তালিকভুক্ত হবে একদিন পুরো বিশবে।

ইভ্যালীর ব্যাপারে আমি এখন পর্যন্ত যত লেখা বা ব্যাখ্যা দেখেছি এর সিংহভাগই ভুল তথ্য উপাত্তে ভরা , ইভ্যালী সম্পর্কে কোন ধারনাই নাই, জাস্ট কল্পনাপ্রসূত কথা বার্তায় ভরা এমন পেয়েছি। তারা তাদের প্রচলিত জ্ঞ্যান বা ধারনা দিয়ে ইভ্যালীর ব্যাপারে কিচ্ছুটি না জেনেই একে ব্যাখ্যা করতে নেমে গেছেন তাড়াহুড়া করে নিজের পন্ডিতি দেখাতে। মূলত ইভ্যালী সম্পূর্ন্য নতুন একটি মডেল। প্রচলিত ধারায় এটিকে ব্যাখ্যা করা যাবেনা। হ্যা ইভ্যালীর সিস্টেমে দু নম্বরী থাকতে পারে, ছোটখাট অনেক দু নম্বরী আছেও। কিন্তু সঠিক ভাবেও কিভাবে এই ব্যাবসা করা যায় সেটাও আমি দেখিয়েছি। এখন সবাই আগে থেকেই নিজেদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ায় নেগেটিভ জাজমেন্ট পাস করছে, রায় দিয়ে দিচ্ছে যেটা অন্যায়।

বড় বড় ফেসবুক বোদ্ধা, এ্যানালিস্টরাও ইভ্যালীকে বুঝতে ব্যার্থ হয়েছে। আমার কথা হচ্ছে কাস্টমারের বা সবার এটা বোঝার দরকার নেই বা ক্যাপাসিটিও নেই। আর ব্যাবসার কিছু তো সিক্রেট থাকবেই, যতক্ষন না ইল্যিগাল হয়। নীতি নির্ধারকরা বুঝলেই হবে। কিন্তু আমি ভয় পাই, বাংলাদেশে নতুন কিছু আসলেই সেটাকে ইউরোপের মধ্যযুগীয় বর্বরতার মত করে “উইচক্রাফট” বলে ব্যান করে দেয়া হয়। কাবাডি খেলার মত সবাই পিছন থেকে টেনে ধরে। ইভ্যলীর ক্ষেত্রেও সম্ভবত সেইরকম কিছু হতে যাচ্ছে। এবং আমারা প্রতিদিনের মত আবার হেরে যাচ্ছি। তবে কোন সমস্যা নেই আমি রাসেল সাহেবকে বলব এই দেশে আপনাকে দাম দিতে না পারলে আপনি যেইসব দেশে লিগালি কাজ করলে অন্যকোন ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয় না এমন কোন দেশে এই থিমে আপনার বিজনেস দাড় করাবেন। সেটা আপনার জন্যই ভাল। তখন বাংগালী বুঝবে কি হারাইল।

আর ইভ্যালীর এই নতুন স্ট্র‍্যাটেজির কারনে বাংলাদেশে বিপনন ব্যাবস্থায় অসম্ভব পরিবর্তন আসবে, আর এতে অনেক দুয়ার উন্মোচিত হলেও এবং কাস্টমারের লাভ হলেও অনেকের ব্যাবসাতেই লাল বাতি জ্বলবে। তাই এ্যামাজনের প্রতিনিধি ইভ্যালী ভিজিটের দুই দিন আগেই কেন ইভ্যালী নিয়ে এই নাড়াচাড়া সেটা বুঝতে বোদ্ধা হতে হয় না।

আমি ছোট মানুষ একটা লিংক দিচ্ছি উনি আবুল হাসনাত সোহেল সাহেব। দুই বার FCPA করেছেন। প্রাক্তন স্যামসাং এর ডিজিএম। ২৮ দেশের কান্ট্রি ম্যানাজার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা।
https://rb.gy/mapiqx

আমি কে এইসব লেখার?

আমি একজন সাধারন ইকমার্স বা বিজনেস Enthusist. ইভ্যালীর সাথে কোন সম্পর্ক নাই। জানি যারা দালাল বলবে তারা পুরো লেখায় ইভ্যালীর বিরুদ্ধেও অনেক কিছু লেখার পরেও দালাল বলবে। আমি সব ইকমার্স প্লাটফর্মকেই ক্লোজলি অবসার্ভ করি। নিজের ৯০% শপিং দেশের প্রমিনেন্ট সব ইকমার্স থেকে কিনে ফার্স হ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স নেই, এইটুকুই। মূলত নিজের ইকমার্স বিজনেস করার ইচ্ছা আছে বলেই এত কিছু খেয়াল করি, পড়ি এবিং কিছু কোর্স ও করেছি। বর্তমানে নিজের একটি ইন্টেরিয়র ডিজাইন ফার্ম আছে এইটুকুই।আর আমি লেজি মানুষ একবার কমেন্ট চালাচালি শুরু হলে চলতেই থাকে, কিভাবে এত বড় লিখা লিখসি জানিনা, কমেন্টের রিপ্লাই দিতে পারব কিনা জানিনা।

Maksudur Rahman

4.6/5 - (7 votes)