Sunday, November 24, 2024
BusinessE-Commarce

বাংলাদেশে ব্যবসা, স্টার্ট-আপ, এবং আবেগ

 

১। প্রথাগত মডেল এর বাইরে, প্রথাগত মডেল এর বাইরে কোন কিছু করতে গেলে বা প্রথাগত কিছু করতে গেলেও আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি আগে দেশীয় আইন সিদ্ধ হওয়া জরুরী, মানে নতুন ব্যাংকিং করেন আর অনলাইন শপ করেন আগে লিগ্যাল সাপোর্ট নিয়ে, ব্যবসায়িক মডেল এর বৈধতা নিশ্চিত হয়ে ব্যবসা শুরু করার পক্ষে আমি। আপনি একটি বড় প্রতিষ্ঠান করতে চান সেটি শুরুর আগেই লিগ্যাল বিষয়ে নিশ্চিত হবেন না এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়ার মত না। নতুন ধারার কিছু করার আগে ব্যাপারে দেশের কোন আইন আছে কিনা, বা থাকলে বৈধতা পেতে করনীয় গুলি কি কি। না থাকলে কিভাবে দেশের আইন গত লেভেল সেটা নিয়ে কাজ করা যায় এবং সেই ধরনের নীতিমালা আসার পরেই ব্যবসা শুরু করব এটা তো সিম্পল। প্রথার বাইরে গিয়ে পাঠাও কিন্তু প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে, তারা নিজেরা পলিসি লেভেল কাজ করে সেটার বৈধতা এনেছে এবং ব্যবসা চালু রেখেছে। ব্যাপার অনেকটা ছোট বেলায় বাসার বাইরে যাবার মতমা বাবাকে বলে গেলে ভাল। না বলে গেলে ফিরে আসলে বা মাঝপথে কেউ দেখে বাসায় বলে দিলে বাবা মা বকা বা মাইর দিবে, এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এখন আমাদের দেশের এই ইনোভেশন আর্কিটেক্ট দের কথা বলি। এরা কথায় কথায় দেশের আইন, সরকার ইত্যাদির উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে মনে করি বিশাল ব্যাপার করে ফেলেছি। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে, আপনার প্রয়োজনীয় ব্যবসাটির বৈধতা নিরুপন করার জন্য আপনি কতটা কাজ করেছেন তাও এখানে একটি উল্লেখ যোগ্য বিষয়।

মানে ধরুন আমি একটি অনালাইন () সেবা প্রদান করব যেটা দেশের মডেল গুলি থেকে আলাদা। আমি যাব ব্যবসায়িক ডকুমেন্টশন , ওই সেবা যেহেতু একেবারেই নতুন মডেল তাহলে আমি আইন গত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেই মডেল এর ব্যবসার জন্য ট্রেডলাইসেন্স এর সাথে অনাপত্তিপত্র, মূল্ধন সংক্রান্ত পত্যয়ন পত্র, ট্রাঞ্জেকশন রিলেটেড প্রত্যয়ন পত্র (দেশের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক থেকে), এরকম প্রতিযোগিতা কমিশন এর প্রত্যন পত্র, আর্থিক অডিট এর প্রত্যয়ন পত্র এবং আমার ব্যবসায়িক পলিসির অনাপত্তি পত্র সংগ্রহ করে নিব। তার পরেই না আমি এমাজন গঠনে নেমে পড়ব।

 

২। সরকার কেন প্রতিষ্ঠান মাঝ পথে যাবার পর ধরে? আসলে সরকার সহ যে কোন আইনি প্রতিষ্ঠানই কোন প্রকার অভিযোগ ছাড়া সিরিয়াস লেভেল এর ইনভেস্টিগেশন করে না। মানে সোজা বাদী ছাড়া কি মামলা হয়? সুতরাং যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরুর দিকেই হোক, শেষের দিকেই হোক অভিযোগ পেলেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সেদিকে মনোনিবেশ করে এবং অভিযোগ ছাড়াই যদি এই প্রয়োগ অব্যহত থাকে তাহলে দেশের সামগ্রিক ব্যবসা পরিবেশ নস্ট হবে। আবার অনেক ব্যবসা ধরনে নতুন হওয়ায় সেগুলার মোটিভ বুঝতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সময় নেই। যেমন ধরেন ডেসটিনি বিভিন্ন ব্যবসার প্রফিট থেকে লাভ দেবার কথা বলেছিল, তারা অনেক ব্যবসা দেখিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ এর পর দেখা গেল তাদের যে সম্পত্তি আছে তা ডান হাত বাম হাতের তুলনায় অপ্রতুল। মানে লাইবিলিটি মূলধনের তুলনায় অনেক বেশি। একই ভাবে আরো যাদের উপর আইন প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের কেউই আসলে পরবর্তিতে নির্দোষ ছিল এমন মনে হয়নি। মানে ধরুন আমি একটা ক্রিকেট বাজির সাইট করলাম। এটা মাস খানেক চলতে পারে, অভিযোগ না উঠলে বছর খানেক। কিন্তু অভিযোগ আশা মাত্র আমি আইনের জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে বাধ্য। আমি যে কোন দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং অভিযোগ পরবর্তি একশন আমি কখনো নেগেটিভ ভাইভ ফিল করিনাই।

 

৩। সাধারন মানুষ কেন ধরা খায়? ডেসটিনি যখন হয়েছে বা ওই মিরপুর সংঘ যখন হয়েছে তখন কিন্তু অনেকেই এটাতে যেতে তাদের আত্মীয়দের মানা করেছেন। তার পরেও তারা গেছেন অর্থাৎ স্পষ্টত এই লোক গুলি লোভী। লোভ একটা বড় অন্যায় বা পাপ হিসেবে আমি মনে করে, এটাই একমাত্র পাপ যেটাতে আমি ছোট থেকেই মানুষ কে ইহ জগতেই শাস্তি পেতে দেখে আসছি। ধরুন ডেস্টিনি বা কোম্পানি এক্স কে জিজ্ঞাসার পর দেখা গেল তাদের ব্যালেন্স ১১৫২ কোটি টাকা, কিন্তু লোকে তাদের কাছে পাবে ৯০০০০ কোটি টাকা, এখন এই ব্যবসা চলতে থাকলে তো এই ৯০০০০ কোটি বেড়ে ৯০০০০০০ কোটিতে যেয়ে দাঁড়াবে তাইনা? সুতরাং এখানে যারা লোভের কারনে ইনভেস্ট করেছিলেন তাদের টাকা ফেরত দেবার একমাত্র পন্থা হচ্ছে তাদের ব্যালেন্স এর সাথে লাইবিলিটির গ্যাপ পরিমান টাকা ভুর্তুকি দেয়া।

লোভীদের ভুর্তুকি?
ধরেন তারপরেও দিলো সরকার (যাস্ট দিলে কি হবে বোঝার জন্য), এর পর কোন এরকম কোম্পানি আসলে আপনি আমি সবাই নিশ্চিন্তে টাকা দেব, কারন ভেগে গেলে তো সরকার দেখবেই তাই না? সুতরাং মানুষ রিস্ক নিয়ে বা অভদ্র ভাবে বললে লোভ করে যে ইনভেস্ট করছে তা যদি যার কাছে ইনভেস্ট করছে তার কাছে না থেকে তাইলে তা ফেরত দিবে কিভাবে। আর তার কাছে দেয়ার পরিস্থিতি থাকলে সেটা বন্ধ করবে কেন?

 

ধরেন পাড়ার দুইটি ছেলে মারামারি করছে, আপনি এলাকার কর্তব্য পরায়ন বড় ভাই যেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কি হয়েছে, একজন অভিযোগ কারী বললো ভাই তাকে আমি ক্রিকেট ব্যাট কেনার জন্য টাকা দিয়েছিলাম হোটেল আরেক জন কে নাস্টা করিয়েছে। এখন আমার ব্যাট দিচ্ছেনা বা বলছে বাট দিবে ১০ দিন পর, আমি তখন টাকা ফেরত চাইলাম তাও দিচ্ছে না। তো আপনি যাকে টাকা দিছে তার পকেট হাতড়ালেন দেখলেন পকেট দেয়া ১০০০ টাকার ৩০০ টাকা আছে। আপনি কি পকেট থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে আসেন সেই অভিযোগকারীকে?

 

একই রকম সরকারী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি অভিযোগ এর প্রমান পায় তাহলে অভিযোগ পরবর্তি সিদ্ধান্তেও আমার কোন অভিযোগ নেই।

 

নাগরিকের কয়েকটি কর্তব্য আছে অধিকারের পাশাপাশি যেমন আইন কে সহায়তা করা। বাসার কাছে আগুন ধরলে ফায়ার সার্ভিস কে ফোন না করলে তো আর তারা আসবেনা, নাকি তাদের প্রতিদিন টহল দেয়া উচিত কার বাড়ী আগুন ধরছে। নাগরিক এর অধিকার হচ্ছে অভিযোগ পরবর্তি তে বিচার পাওয়ার।

 

এখানে পুরো প্রসেস আইন গত প্রস্তুতি, অভিযোগ, অভিযোগ এর সত্যতা যাচাই এবং সে অনুসারে সিদ্ধান্ত গ্রহন করার যে ব্যাপার রয়েছে এতে খারাপ হতে পারে মিথ্যা অভিযোগ, কাগজ পত্র থাকা সত্তেও শাস্তি পাওয়া। হিসাব মেলা সত্তেও ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া ইত্যাদি।

 

নতুন ব্যব্যসা উদ্যোগ এর পাশে থাকার পাশাপাশি , গ্রাহকদের নিরাপত্তার পাশেও থাকার আহ্বান। দেশি উদ্যোগ এর সাকসেস আনন্দিত হবো এটা যেমন স্বাভাবিক। আবার তারা পরিক্ষিত হয়ে আসুক তাতেও তাদের প্রতি সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানাই সবাইকে।

ধন্যবাদ সবাইকে।

 

 

Rate this post