Friday, November 22, 2024
EvalyOpinion

ইভ্যালি নিয়ে ডেইলি স্টার, প্রথম আলোর নোংরা মিশন

ইভ্যালি নিয়ে ডেইলি স্টার, প্রথম আলোর নোংরা মিশন

ডেইলি স্টারের একটা কাটপিস ভিডিও দেখলাম আজকে ইভ্যালিকে নিয়ে। ভিডিওর মোদ্দা কথা ইভ্যালির কাস্টমাররা তাঁদের অর্থ পাবেন না কিংবা কেউ কেউ পাবেন, বেশীরভাগই পাবেন না ইত্যাদি ইত্যাদি।

‘আমি খালি একবার বাহির হই। দেখবি কিভাবে আমি ঘুরে দাঁড়াই। আমি পালিয়ে যেতে চাইলে হাজার হাজার কোটি ট্র্যানজেকশান হবার সময় পালিয়ে যেতে পারতাম। আমার সেই সুযোগ ছিলো। আমার মাথাতেও আসেনি এই কথা। এই দেশে আমি ব্যবসা করতে চেয়েছিলাম, ব্যবসা করতে চাই এবং ব্যাবসা করবো’ – মোঃ রাসেল

ইভ্যালির আইনী দলের শুধু সমন্বয়ক কিংবা রাসেলের স্কুল ফ্রেন্ড বলেই নয়, বরং ভবিষ্যতে এই ই কমার্সের ক্রাইসিস নিয়ে লেখালেখি করবার জন্য বাংলাদেশের সবচাইতে বৃহৎ এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির মামলা পরবর্তী ঘটনায় ডকুমেন্ট, নথি-পত্র তথা প্রতিটি গলি-ঘুপচি আমি অনেকটা ঈগল পাখির মত তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে পর্যবেক্ষন করেছি ও করছি।

ডেইলি স্টার আর প্রথম আলো ইভ্যালির ব্যাপারে যা করেছে সেটিকে শুধু অন্যায় বলে আমি ‘অন্যায়’ শব্দকে আসলে তার প্রচলিত অর্থে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইনা। এটি অন্যায়ের থেকেও বড় কিছু। এটি এই পুরো পত্রিকা দলটির ‘কোনো এক কারনে’ ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী রাসেলের প্রতি প্রতিশোধ নেবার নোংরা মিশন যা তারা দীর্ঘ সময় ধরে পুষে রেখেছিলো বলেই আমি মনে করি।

রাসেলের ব্যাবসায়িক দূর্বল দিক, তাঁর নানাবিধ ভুল-সিদ্ধান্ত কিংবা রাসেলের এই ব্যবসার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে সমালোচনা পাতার পর পাতা হয়ত লেখা সম্ভব কিন্তু রাসেলের ক্ষেত্রে বা বিরুদ্ধে যেই অভিযোগকে আমি দু হাত দিয়ে সরিয়ে দেই, সেটি হচ্ছে রাসেলের বিরুদ্ধে আসা এই ডেইলি স্টার আর প্রথম আলো ডুয়ো’র এমন নানাবিধ মিথ্যে প্রোপাগান্ডা।

আমার হাতে থাকা সমস্ত কাগজ পত্র, মামলার নাড়ি-নক্ষত্র সমস্ত কিছুই পরিষ্কার নির্দেশ করে রাসেল কারো টাকা মেরে খাবে কিংবা কারো সাথে প্রতারণা করবে এমন উদ্দেশ্য নিয়ে একটি পা ফেলেন নি।

আমি গল্প বলছি না, আমি যা বলছি তা ফ্যাক্ট এবং সেটা নথি পত্র দেখে বলা ফ্যাক্ট। মামলার এক বাদী সি এম এম কোর্টে আমাকে জড়িয়ে কেঁদে দিয়েছে এই বলে-
– ‘স্যার আমি মামলা করতে চাইনি। আমাকে মাফ করে দিয়েন স্যার। আর কিছু আমাকে বলতে বলবেন না স্যার’ বাদীর বক্তব্যে আমার কিছুই করার ছিলোনা কেবল স্থানুর মত দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া।
শুধু একজন বাদী নয়, একাধিক বাদী আমার কাছে এসে আমাকে কখনো জড়িয়ে ধরেছেন কিংবা আমাকে মাথা নীচু করে শুধু ‘সরি’ বলে চলে গেছেন সেই মাথা নীচু করেই। ‘স্যার এই রাসেল ভাইয়ের জন্য আজকে আমি কোটি টাকার মালিক হইসি। স্যার এই রাসেল ভাইয়ের বিরুদ্ধেই আমাকে দাঁড়াতে হয়েছে’
আমি প্রথম প্রথম জগতের সমস্ত বিষ্ময় নিয়ে সেই ব্যাক্তি বা ব্যাক্তিবর্গের দিকে তাকাতাম। সময়ের সাথে সাথে আমার সমস্ত বিষ্ময়ের ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
 
একবার এক ফটোকপির দোকানে ইমার্জেন্সি ফটোকপি করাতে গেছি। এক লোক জানতে পারলেন আমি ইভ্যালি আইনী দলের মানুষ। আমাকে তিনি বলছেন- ‘ভাই, দুইডা অর্ডার কিনা লইসি ইভ্যালির কাস্টমারের কাছ থেইকা। এখন হ্যার হইয়া মামলা আমিই দিমু। এইডা একটা ইনভেস্ট। বুঝলেন না? হে হে হে হে’ কোর্টে গিয়ে আমার সহকর্মী প্রিয় হাবিব ভাইকে জিজ্ঞেস করি, এই অর্ডার কিনার ব্যাপারটা কি?
হাবিব ভাই হাসে। বলে ভাই, সি এম এম আর জজ কোর্টের আশে পাশে শত শত টাউট-বাটপার দেখবেন। এগুলার সাথে এক শব্দও কথা বইলেন না। আমি সে কারনেই আর কারো সাথে কথা বলিনা। বিষ্ময় নিয়ে শুধু চারিদিক দেখি আর দীর্ঘঃনিশ্বাস ফেলি।
রাসেল বা ইভ্যালি কারো টাকা ফেরত দেবে না, ডেইলি স্টারের এই নোংরা প্রোপাগান্ডার উত্তরে আমার কেবল রাসেলের কথাটাই কানের ভেতর বাজতে থাকে। ‘দোস্তো, আমি খালি একবার বাহির হই। দেখবি কিভাবে আমি ঘুরে দাঁড়াই। আমি পালিয়ে যেতে চাইলে হাজার হাজার কোটি ট্র্যানজেকশান হবার সময় পালিয়ে যেতে পারতাম। আমার সেই সুযোগ ছিলো। আমার মাথাতেও আসেনি এই কথা। এই দেশে আমি ব্যবসা করতে চেয়েছিলাম, ব্যবসা করতে চাই এবং ব্যাবসা করবো’ ইভ্যালি যে সমস্ত পাওনা পরিশোধ করতে চায়, ইভ্যালি যে সব কিছু পেছনে ফেলে আবার ব্যবসা করতে চায় এটি আমি অনেকের চেয়ে বেশী কাছ থেকে জানি এবং বিশ্বাসও করি।
জেল থেকে বের হয়ে আসবার রাসেলের যে প্রবল তাড়না, সেটি কেন হবে তার?
 
হিসেব অনুযায়ী রাসেলের তো জেলেই সমস্ত আনন্দ হবার কথা কিংবা আনন্দে থাকবার কথা। ডেইলি স্টার আর প্রথম আলোর কথা যদি আমরা আমলেই নেই তাহলে রাসেল সবচাইতে নিরাপদ থাকবে জেল হাজতে। তাহলে আমরা ৭-৮ জন আইনজীবি দিনের পর দিন কেন খেটে যাচ্ছি? কেন আমরা পাগলের মত হয়ে গেছি রাসেল আর আর তাঁর স্ত্রীর জামিনের জন্য? রাসেল কি জানেন না যে জেল থেকে বের হয়ে আসলে সমস্ত পাওনাদার তাঁকে ঘিরে ধরবেন? টাকা চাইবেন? রাসেল জানেন, জানেন এবং জানেন সমস্ত কথা। একবার কি ভেবে দেখেছেন তারপরেও তিনি কেন বের হয়ে আসতে চান? একবার কি মাথাটা খাটিয়ে চিন্তা করেছেন রাসেলের স্বশুর আর শাশুড়ী এত ঝুঁকি থাকা সত্বেও ইভ্যালির দায়িত্ব নেবার কথা বলে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত কেন গিয়েছেন তাঁদের এই বয়সে?
 
একটাবার কি আপনারা ভেবে দেখেছেন সেসব? একটাবার কি আপনারা নিজেদের মাথাটা খাটিয়েছেন এই নিয়ে? গত ৫ মাসে অন্তত পক্ষে ১০ হাজার ইভ্যালির কাস্টমারের সাথে দেখা করেছি, কথা বলেছি, আলোচনা করেছি কিংবা তাঁদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি।
রাস্তায়, এভিনিউতে, শপিং মলে, স্কুলে, কলেজে, লাইব্রেরীতে, মাঠে, আমার বাড়ীর সামনে এসে তাঁরা আমাকে ধরে কেঁদেছেন। আমাকে তাঁরা জড়িয়ে ধরে রেখেছেন। আমাকে তাঁরা তাঁদের সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে একটি কথাই বলেছেন,-
“রাসেল ভাইয়ের জন্য আমি আমার জীবনের সমস্ত অর্জন দিয়ে দেবো। শুধু আমাদের রাসেল ভাইকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিন। ভাই ছাড়া কিছু ভাল্লাগে না। ভাই ছাড়া ই-কমার্স মরে যাবে। এই দেশের ই-কমার্সের সমস্ত কিছু জুড়ে রাসেল ভাই’

ডেইলি স্টার আর প্রথম আলোর এইসব প্রোপাগান্ডা, এইসব নিয়মিত ইতরামি, এইসব অসভ্যতা, নোংরামি, আর হলুদ সাংবাদিকতা এইসব গ্রাহকদের সামান্য বোকা বানাতে পারেনি। কারন সবাই বোঝে ডেইলি স্টার আর প্রথম আলো কেন ঘসে।

যে কথা আমরা ব্লগ জীবনে বলতাম, ‘তুমি কেন ঘষো, তাহা আমি জানি’ রাসেল আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন একদিন। মিসেস রাসেল আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন একদিন। ফিরে এসে এই সমস্ত নোংরামির চূড়ান্ত জবাব দেবেন। এই দেশের লক্ষ তরুন-যুবকদের নিয়ে রাসেল-ই হবেন এই দেশের ই-কমার্সের কিংবদন্তী।
 
একদিন রাসেল দিগুন হবে। একদিন রাসেল সমস্ত কিছুর জবাব দেবে। তাঁকে নিয়ে মিথ্যাচার। তাঁকে নিয়ে সমস্ত মিথ্যে প্রচারনার। আমরা শুধু সেই সময়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।
 
~ নিঝুম মজুমদার
Rate this post