Thursday, November 21, 2024
EvalyOpinion

ইভ্যালির মার্চেন্ট ও ভোক্তাদের সংবাদ সম্মেলন ও মতামত

ইভ্যালির মার্চেন্ট ও ভোক্তাদের সংবাদ সম্মেলন ও মতামত

     রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজ সংবাদ সম্মেলনের জন্য সমবেত হয়েছিলেন ইভ্যালির গ্রাহক-মার্চেন্টরা।

অবশ্য সংবাদ সম্মেলনের আগে ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তারের দিন হতে প্রতিদিন সমাবেশ, মানবন্ধনসহ নানা কর্মসূচি করে তাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছেন গ্রাহক-মার্চেন্টরা। এসব কর্মসূচি সারাদেশ হতেই চলতে দেখা যায়।

রোববারের সংবাদ সম্মেলনটি আমি গণমাধ্যমে লাইভ দেখছিলাম।

সংবাদ সম্মেলন উপলক্ষে মার্চেন্টদের পাশাপাশি অনেক গ্রাহকরাও এসেছিলেন রিপোর্টার্স ইউনিটিতে। তারা যে সত্যিই গ্রাহক তা প্রমাণের জন্য তারা কেনাকাটার ইনভয়েসও নিয়ে এসেছিলেন।

তারা ৭টি দাবি তুলেছেন:

১. ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের মুক্তি ।

২. ইভ্যালি সিইওকে নজরদারির মাধ্যমে দিক-নির্দেশনা দিয়ে ব্যবসায় করার সুযোগ দেয়া ।

৩ স্ক্রো সিস্টেম চালু হওয়ার আগে অর্ডার করা পণ্য ডেলিভারি দিতে ইভ্যালি সিইও’র চাওয়া সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে চাওয়া ।

৪. বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ই-ক্যাব, পেইমেন্ট গেটওয়ে, মার্চেন্ট এবং ভোক্তা প্রতিনিধিদের সমন্বয় কমিটি গঠন ।

৫. করোনাকালে বিভিন্ন খাতের মতো ই-কমার্স প্লাটফর্মগুলোকে প্রণোদনা দেয়া ।

৬. ই-কমার্স প্লাটফর্মগুলোকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ব্যাংক গ্যারান্টিসহ লাইসেন্স নেয়া বাধ্যতামূলক করা ।

৭. বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে হাজার হাজার উদ্যোক্তা তৈরি এবং লাখ লাখ কর্মসংস্থানের কারণে ই-কমার্সকে সরকারিভাবে সুরক্ষা দেয়।

দাবিগুলোর এই যৌক্তিকতা নিয়ে খানিকটা আলোচনা হতেই পারে। শুরুতে প্রাসঙ্গিক কিছু রেফারেন্স দেখা যাক।
@
১৭ সেপ্টেম্বর রাতে একাত্তর টেলিভিশনে দেশের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান শান্ত বলেছেন, জেলে নিয়ে গেলে কোনো রেমেডি নেই। ইভ্যালির মালিকদের পার্সপোর্ট সিজ করা, তারা তো কোথাও যেতে পারতো না। তাকে তো সময় দিয়ে এক বছর পরও গ্রেপ্তার করা যেতো।
তিনি ওইদিন বলছেন, ‘কাস্টমার বেইজড তৈরি করে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করে একটা কোম্পানিকে বিক্রি করা তো ক্রাইম নয়। বিজনেস মডেলে ফ্ল থাকতে পারে এবং তা কারেক্ট করার সুযোগ করে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করা তো পজিটিভ।’
@
একই অনুষ্ঠানে এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) বাংলাদেশ ব্যুরো প্রধান ও রোটারি ক্লাব অব উত্তরার প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান জুলহাস আলম রিপনও অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনিও শতভাগ একমত প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমানের সঙ্গে।
তিনিও প্রশ্ন তুলেছে গ্রেপ্তার নিয়ে ! মূল কথা সেটাই, তাদের পাসপোর্ট জব্দ, তাদের মানিলন্ডারিং বা টাকা পাচারের অন্য কোনো অভিযোগ তো এখন পর্যন্ত পাওয়া যাযনি । তারা সময় চেয়েছিলেন সেটা দিতে কী সমস্যা ছিলো ?
@
ওই অনুষ্ঠানেই ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার অনেক আলোচনার মধ্যেও এটাও লাউডলি বলেছেন, মানি লন্ডারিংয়ের কোনো অভিযোগ ছিলো না বলেই ইভ্যালির একাউন্ট খুলে দিয়েছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনার বিপদে ইভ্যালিসহ ই-কমার্সগুলোই সাপোর্ট করতে এগিয়ে এসেছিল।
ইক্যাব সভাপতির বক্তব্য, ইভ্যালি সময় চেয়েছে, ৬ মাস সময় তাদের দেয়া হতো। নিজের দেশের কোম্পানিগুলো বিশ্বখ্যাত হতে তো সহযোগিতা করতে হবে, বিদেশিরা যেনো তা নষ্ট না করতে পারে।
@
১৭ সেপ্টেম্বরই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মানিত সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকনের একটি স্ট্যাট্যাসের এক অংশে তিনি বলেছেন, ‘জালিয়াতি আর আইনের ফাঁকফোকর’ কাজে লাগানো এক নয়। আমার যেটা মনে হয়েছে হলমার্ক,এহসান গ্ৰুপ পুরোপুরি জালিয়াতি করেছে আর ইভ্যালিসহ ই-কমার্সগুলো আইনের ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়েছে।’
তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র অভিভাবক। রাষ্ট্রের হাত অনেক লম্বা। অনেক বিজ্ঞ লোকজন রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন শাখায় কাজ করেন। সবার উচিত বিকল্প কোনো পথ খুঁজে বের করে সমাধান করা। যাতে রাষ্ট্র এবং জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এবং দেশে নতুন উদ্যোক্তা তৈরির পথ বন্ধ না হয়।’
@
২২ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও বলেন, ‘আমরা যেটা রাসেল সম্পর্কে বলেছি, তাদের সঙ্গে কথা বলা দরকার, তারা একটা প্রোগ্রাম… তাদের আদৌ সম্পদ আছে কি-না, সেখানে কংক্রিট কিছু দিলে, কোনো বিজনেস প্ল্যান দিলে, আমরা সেটা দেখতে পারি, লজিক্যাল কিনা, আসলেই কিছু আছে কি-না।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘তাদের (ই-কমার্স মালিক-কর্মকর্তা) জেলে ভরে রাখলে তো গ্রাহকরা কিছু পাবে না। আবার কিছু না থাকলে বের করলেও লাভ হবে না।
@
২৯ সেপ্টেম্বর মাননীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উল্লেখ করেছেন, ‘আলিবাবা’, ‘ই-বে’ এবং ‘অ্যামাজনের’ মতো প্রতিষ্ঠানও শুরুর দিকে ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করলেও পরে সেটা সমন্বয় করেছিল’।
তিনি বলেন, ‘অবিশ্বাস্য রকম মুনাফা দেওয়ার যে আশ্বাস, যেখানে বড় ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যাদের উদ্দেশ্য ভাল ছিল, তারা টাইমিংটা ঠিকমত করতে পারেনি। আর যাদের উদ্দেশ্য গোড়াতে গলদ ছিল- আমরা টাকা পাব, এটা নিয়ে পালায়ে যাব, এটাও কিন্তু আছে ‘’
তাহলে মোটিভটা আমরা দেখি একটু :
ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যান তো পালিয়ে যেতে চাননি, অন্তত এমন কোনো উদ্দেশ্য কেউ প্রমাণ করতে পারেননি এখনও। বরং তাদের পাসপোর্ট জব্দ ছিলো তারা আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতেও ছিলেন।
ইভ্যালির ফরম্যাটের ব্যবসায়িক পদ্ধতিতে কোনো এমএলএম জাতীয় কার্যক্রম করেনি ইভ্যালি (এমএলএম সংক্রান্ত আইনি কাঠামো অনুসারে ইভ্যালির ফর্মূলা অভিযুক্ত হয়নি), দীর্ঘ সময়ে এটা শুধু একটা শ্রেণী নানাভাবে বলে গেছেন যে, ওটা ওমন- কিন্তু সত্যিই তা কোনো বেইজে প্রমাণিত হতে দেখিনি। এটা প্রমাণ হলে তার জন্য তো পৃথক আইনই ছিলো।
এছাড়া ইভ্যালির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, টাকা পাচার বা অন্য কোনো অপরাধও পাওয়া যায়নি, অন্তত আমরা দেখিনি এখনও। যেগুলো, ই-অরেঞ্জ, ধামাকাসহ অন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে। অথচ কথায় কথায় এদের সঙ্গে ইভ্যালিকে মিলিয়ে ফেলা হচ্ছে।
সবচেয়ে দেখার বিষয় যে, ইভ্যালি কী করেছে সেটা খুব পরিস্কার।
ইভ্যালি বেশ আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট দিয়ে বেশ পণ্য বিক্রি করেছে এবং এই বিকিকিনির টাকা দিয়ে সে এগ্রেসিভভাবে বাজার দখল করেছে । একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় গ্রাহকের টাকা গ্রাহককেই ফিরিয়ে দিয়েছে, বিপণন-প্রচারণায় ব্যয় করেছে, বিভিন্ন জাতীয়-আঞ্চলিক আয়োজনে স্পন্সর করেছে, ব্যবসার পরিসর ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে।
আমরা এখানে দেখছি, সেই ২০২০ সালের আগস্ট হতে এখন পর্যন্ত বছরব্যাপী বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর কোনো তদন্তে তাদের বেআইনি কার্যক্রমও প্রমাণিত হয়নি। একইভাবে এতোকিছুর পরও কোনো গণমাধ্যম কিন্তু কোনো আইনি তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এগুলো বলতে পারেনি, এখন পর্যন্ত অন্তত দেখিনি।
‘সমস্যা তৈরি হওয়া পর ইভ্যালি বলে আসছে তাদের নিয়ন্ত্রণ, মনিটরিং ও শাসনে রেখে সময় দেন, যা দেনা জমেছে সব শুধিয়ে দেবে তারা। আর এটাই ইতোমধ্যে তারা শুরুও করছিলো বলে দেখেছি। যেখানে বর্তমানে যে নিয়ম-নীতি চালু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং নিয়ন্ত্রণ সংস্থার যে মনিটরিং সেখানে গ্রাহকদের এক শতাংশও ঝুঁকি কিন্তু নেই।
অন্যদিকে ইভ্যালি কোনো নিষিদ্ধ প্রডাক্ট বিক্রি করে না, কোনো নকল প্রডাক্ট না, কোনো মজুদদারি-বাড়তি দামের ব্যবসা না, ইভ্যালি এখন গ্রাহককে আগে প্রডাক্ট দেয় তারপর টাকা পায়, পুরোনো জমে থাকা পণ্য ডেলিভারি দেয়া শুরু করছে, গ্রাহক-মার্চেন্টদের টাকা অল্প অল্প করে দিতে শুরু করেছে। ৫ মাস সময়ই চেয়ে আসছে সে।
আমরা কী দেখলাম, যত সমস্যা এই সময় দেয়া নিয়েই।
হুট করে একজন ডাক্তার ডিগ্রিধারী উপস্থাপক হতে ই-কমার্স বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠা এক ব্যক্তি, কিছু তথাকথিত সোশ্যাল সেলিব্রেটি, ‘কিছু মিডিয়া ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ব্যাপক ‘এক্টিভিটি’ দিয়ে জোর করে তাদের একটা পারসেপশন প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা আমরা দেখে চলেছি।
তারা অনেকটা সফলও, ‘ইভ্যালি কেলেঙ্কারি, বাটপার ই-কমার্স, প্রতারক ইভ্যালি, পঞ্জি স্কিম ইত্যাদি শব্দ ও ট্যাগ তারা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। আলোচনা শুরু হলেই তারা ডেসটিনির তুলনা দিয়ে শুরু করেন। ইদানিং ইভ্যালির ৭ কারণ, পক্ষে-বিপক্ষে এমন নানা টোটকাও দিতে দেখি আমরা।
কিন্তু এই পারসেপশন আর রিয়েলিটি যে এক না সেটা তো দেখা যাচ্ছে। সারাদেশে হাজার হাজার গ্রাহক-মার্চেন্টরা যুক্তিযুক্তভাবে ইভ্যালির স্বপক্ষে কথা বলছেন, তারা আইন-কানুনের মধ্যে ইভ্যালি এগিয়ে যাক সেটা চাইছেন। আসলে প্রবল এই প্রচারণার ক্ষমতার বিপরীতে হয়তো এই রিয়েলিটি প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক সময় লাগবে, কিন্তু এক সময় এটা হবেই।
দুনিয়া জুড়েই আমরা দেখি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের নতুন নতুন পদ্ধতিগুলোতে বেশিরভাগ সময়ই বিশ্বে চলমান আইন কাভার করে না। নতুন নতুন আইন হয়, নীতিমালা হয়। এসব ক্ষেত্রে নতুন নতুন পদ্ধতিগুলো পুরোনো পদ্ধতিগুলো হতে রূপান্তরিত হয়ে নতুন আইনে চলতে শুরু করে।
আমরা আমাদের দেশের উবারের যাত্রাটাই দেখতে পারি। উবার দেশে চালু হওয়ার কয়েকদিন পরেই বিআরটিএ তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কারণ দেশের প্রচলিত আইনে তাদের জন্য গাইডলাইন ছিলো না। পরে তাদের নিবন্ধনসহ তারা কীভাবে চলবে সেই নীতিমালা করা হয়।
ইভ্যালির ক্ষেত্রেও ঘটনাটা তাই।
ইভ্যালি নিশ্চিতভাবেই এতোদিনে বড় বিনিয়োগও পেতো। এখন আমরা দায়িত্বশীল পর্যায়ে অনেককে বলতে শুনি সেই সুযোগ ও সম্ভাবনাটা ইভ্যালিকে কাজে লাগাতেই দেয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি যেনো বিনিয়োগ না পায় তার সব আয়োজনই তো করতে দেখি আমরা।
আর এতো নেগেটিভ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার-প্রচারণা ও চাপের মধ্যে আদৌ কারও পক্ষে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সম্ভব কী ?
    এখন শুধু দুটি দিক। যেখানে আপনি বুঝে যাবেন কার কী স্বার্থ, কার কী ‘ধান্ধা’ ! খারাপ এবং ভালো দুটিই…
এক. ইভ্যালি বন্ধ চায় কারা ?
দুই. ইভ্যালি উদ্যোক্তাদের মুক্তি দিয়ে নজরদারিতে রেখে আইনকানুন-নিয়মের মধ্যে ব্যবসা করার সময়-সুযোগ দিয়ে পাওনা পরিশোধ এবং দেশিয় একটি ই-কমার্সকে বড় হতে দেখতে চায় কারা ?
আমার ব্যক্তি মত সবসময়ই, ইভ্যালি ন্যায় পাক, কোনো যড়যন্ত্রের স্বীকার না হোক। অপরাধ হলে বিচার হোক কিন্তু অপরাধ না করে যেনো কোনো শাস্তি চাপিয়ে দেয়া না হয়। আইনে ন্যায় পাওয়া প্রত্যেকের অধিকার । আইন সবার জন্য সমান। দেশের আইন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা সবসময়ের।
এদিকে একটা মজার বিষয়। ইভ্যালি নিয়ে আলোচনার নানা প্রেক্ষাপটে অনেকেই, নানা প্লাটফর্মের প্রতিনিধিরা বিভিন্নরকম ‘ডিবেট’ করেন আমার সঙ্গে।
আসলে আমাকে যারা সম্মানের সঙ্গে প্রশ্ন করেন, আরেকজনের মতকে শ্রদ্ধা রেখে দ্বিমত করেন কিংবা যৌক্তিক বিতর্ক করতে চান তাদের সবসময়েই আমি স্বাগত জানাই।
অনেকেই বিতর্কে রেগে যান। তারা দ্বিমত ও বিরোধিতার পার্থক্য পর্যন্ত ঠাহর করতে পারেন না। অনেকেই ভাষাগত সৌন্দর্যের জাগায় হতে স্লিপ করে যান।
এমনও ঘটেছে, কোনো ইস্যুতে বিতর্কের শেষে কিংবা আমার রাইট-আপগুলো বিশ্লেষণ করে অনেকেই বলেছেন, তারা আগে মিসগাইডেড ছিলেন।
আবার এমনও হয় কোনো বিষয়ে আমি বলছি, আমার ভাবনার সমীকরণের চেয়ে বিপরীতজনের ভাবনার সমীকরণ বেটার।
আমাকে কোনো বিতর্ক বা আলোচনায় যতোই স্লেজিং করা হোক প্রতিপক্ষের তাতে কোনো লাভ হয় না। আমি কিছুতেই মূল ফোকাস হতে সরে যাই না। এমনকি কোনো বিষয়ে জানার সীমাবদ্ধতা থাকলে তা হাসতে হাসতে অনায়াসে স্বীকার করে নেই।
একটা অদ্ভুত বিষয়ও দেখি, বিতর্ক বা আলোচনায় বেশিরভাগই হার-জিতের মনোভাব নিয়ে অংশ নেন। তারা বিতর্কের মূল জায়গা হতে সরে গিয়ে ঘটনার কোনো ছোট একটি অংশকে বারবার প্রচণ্ড হাইলাইট করেন। এটা আসলে মূল ইস্যু এড়াতে বা ফোকাস সরিয়ে নেয়ার জন্য করা হয়। তারা যেকোনোভাবেই নিজের মত প্রতিষ্ঠিত করতে চান বা চাপিয়ে দিতে চান।
এর একটা সহজ ডেমো দেই, এটা অনেকটা চতুর্থ বিষয়ে ফেল করার মতো। আপনি মূল বিষয় হায়ার ম্যাথে ৯৫ পেয়ে বসে আছেন কিন্তু সেটা কথা না, কথা হলো চতুর্থ বিষয়ে ফেল করলা ক্যান !
ইভ্যালির ক্ষেত্রে যারা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ চান, তারা এই চতুর্থ বিষয়েই একমাত্রভাবে সরব, এটাই তাদের অস্ত্র !
এসব ক্ষেত্রে সাধারণত চুপ থাকি, একদমই চুপ। আর এটাই প্রতিবাদ হয় তখন আমার।

@ Kuheli Pervin Ally

ই-কমার্স পেশাদার। পরিবেশ-প্রকৃতি ও নিরাপদ খাদ্য সুরক্ষাকর্মী।

 

5/5 - (1 vote)