Saturday, April 27, 2024
E-CommarceEvalyNews

১৫০ গ্রাহকের টাকা ফেরত দিল ইভ্যালি

নতুনভাবে ব্যবসা শুরুর পর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি গ্রাহকের পাওনা টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছে। নতুন করে ১৫০ জন গ্রাহককে মোট ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে টাকা ফেরত দেওয়া হয়

মোহাম্মদ রাসেল ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম শফিকুজ্জামানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নতুন করে ইভ্যালি শুরু করার পর আমাদের যে টাকা লাভ হয়েছে সে টাকা থেকেই পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধ শুরু করেছি। এর মধ্যে আমরা প্রায় ৬৫ হাজারেরও বেশি পণ্য ডেলিভারি সম্পন্ন করেছি।

ইভ্যালি থেকে অনেকেই টাকা পাবে তা স্বীকার করে রাসেল বলেন, আমরা এখন যে পদ্ধতিতে পণ্য বিক্রি করছি এতে করে খুব দ্রুতই সকলের টাকা পরিশোধ করা হবে। যারা অভিযোগ করেছে শুধু তাদের নয়, যারা টাকা পাবেন এমন সবার টাকাই পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অভিযোগ) মাসুম আরেফিন বলেন, ইভ্যালির ব্যাপারে ভোক্তা অধিকারে প্রায় ৭ হাজারের মতো অভিযোগ পড়েছে। এর মধ্যে আজ (রোববার) ১৫০টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এসব গ্রাহকদের ১৫ লাখ টাকার ফেরত দেওয়া হয়েছে।

এর আগে রাসেল বলেন, ‘গ্রাহককে এখন আর বিশ্বাসের ওপর টাকা দিতে হচ্ছে না। পণ্য হাতে পেয়ে টাকা দেবে। এজন্য ইভ্যালিতে গ্রাহকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আমরা খুব সামান্য লাভ করছি যেন কোম্পানির খরচ চালিয়ে নেওয়া যায়। আর যেসব পণ্যে ছাড় দেওয়া হচ্ছে সেটা বিক্রেতা নিজের পক্ষ থেকে দিচ্ছেন। এজন্য ইভ্যালির আর লোকসানের সুযোগ নেই।’

এই সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।

নতুনভাবে ব্যবসা শুরুর পর গত ২৬ জানুয়ারি রাতে দ্বিতীয় ক্যাম্পেইন ‘বিগব্যাং-টু’ উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। এর মধ্যে আকর্ষণীয় মূল্য ছাড় রয়েছে মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল, স্মার্ট টেলিভিশন, ব্লেন্ডার, বেল্ট, জিন্স প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও কম্পিউটার এক্সেসোরিজসহ বিভিন্ন পণ্যে।

এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর ‘বিগব্যাং’ নামে প্রথম ক্যাম্পেইন করে ইভ্যালি। মাত্র ২০ ঘণ্টায় দুই লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেয়ে শুরুতেই বাজিমাত করে প্রতিষ্ঠানটি। তারই ধারাবাহিকতায় এবার উন্মুক্ত হচ্ছে বিগব্যাং-টু। এ উপলক্ষে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার পণ্যের সমাহার ঘটানো হয়েছে ইভ্যালির অ্যাপে। বিক্রতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ৫০০। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ মূল্য ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

ইভ্যালি আন্দোলনের সমন্বয়ক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, ইভ্যালি ব্যবসা করে লভ্যাংশ দিয়ে গ্রাহকদের পাওনা দেওয়া সত্যিই প্রশংসনীয়, আমি ব্যাক্তিগত ভাবে আনন্দিত এবং গর্ববোধ করছি।

জনাব মোহাম্মদ রাসেল দম্পতি এরেস্ট হওয়ার প্রথম দিন থেকে ইভ্যালি নিয়ে গঠিত কমিটি অপসারণ করে ব্যবসায় ফিরিয়ে আনা সহ উনাদের জামিনে কারামুক্তি তথা গ্রাহক মার্চেন্টদের জন্য কাজ করেছি। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতাম জনাব রাসেল দম্পতি ব্যবসায়ের সুযোগ পেলে, ইভ্যালির ব্যবসায়িক দায় মিটিয়ে বাংলাদেশের সফল ই-কমার্স স্টার্ট-আপ পরিনত করতে সক্ষম হবেন। আলহামদুলিল্লাহ, জনাব রাসেল জামিনের এক মাসের মধ্যে ইভ্যালি মার্চেন্টদের ব্যবসা করার জন্য আর্দশ প্লাটফর্ম এবং গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা শুরু করছে।

উল্লেখ্য, ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ২০১৮ সালে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠা করে হইচই ফেলে দেন মোহাম্মদ রাসেল। মাত্র দুই বছরের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে ইভ্যালি। কিন্তু ওই সময় ঋণের বোঝাও বেড়ে যায় তাদের। তবে অভিযোগ আছে, ইভ্যালিকে থামানোর জন্য তখন দেশি-বিদেশি কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান উঠেপড়ে লাগে। তার জন্য মোটা অঙ্কের বরাদ্দও করেন তারা। একপর্যায়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গ্রেপ্তার হন রাসেল। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তারে হতাশ হন প্রতিষ্ঠানটির লাখ লাখ গ্রাহক। তারা ইভ্যালির ব্যবসা চালুর জন্য আন্দোলন শুরু করেন। তাকে মুক্তি দিতে ২০ হাজারের বেশি ক্রেতা-বিক্রেতা আদালতের কাছে লিখিত আবেদন করেন।

এর মধ্যে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন রাসেল ও তার প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তবে তার স্ত্রী ও ইভ্যালির চেয়ারম্যান অনেক আগেই মুক্তি পেয়েছেন।

5/5 - (1 vote)