Site iconSite icon Evaly Fan's Club

সময় বদলে দীর্ঘ ছয় মাস কারা বন্দি ইভ্যালির রাসেল দম্পতি

সময় বদলে দীর্ঘ ছয় মাস কারা বন্দি ইভ্যালির রাসেল দম্পতি

আজ দীর্ঘ ৬ মাস, ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়্যারম্যান শামীমা নাসরিন কারাবন্দী।গত ১৬ সেপ্টেম্বর সামান্য কিছু অভিযোগের মামলায়  ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সিইও এবং চেয়্যারম্যানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

অথচ জনাব রাসেল এই ৬ মাস সময় চেয়েছিলেন, ইভ্যালির সকল দেনা পরিশোধ করে লাভজনক প্রতিষ্ঠান করার জন্য। তা না দিয়ে করেছে কারাবন্দী।  হিসাবে করে দেখুন তো, লাভ টা কার হয়েছে?

গ্রাহকের লাভ হয়েছে?  – না!

সেলারের লাভ হয়েছে? – না!

ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির লাভ হয়েছে? – না!

সরকারের লাভ হয়েছে? – না!

নাকি  ইভ্যালির লাভ হয়েছে?  – তাও না!

তাহলে কার স্বার্থে এই সম্ভাবনাময়  এই স্টার্টআপ কোম্পানি বন্ধ হয়েছে? ব্যাংকিং, শো-রুম ব্যবস্থা নাকি বিদেশি কোম্পানি স্বার্থে দেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে গলা চিপে ধরা হয়েছে? 

বলতে পারেন, ইভ্যালির দেনা বেশি।  তাই বলে কোম্পানি বন্ধ? কেন দেশের আর কোন প্রতিষ্ঠান নাই, দেনা বেশি? পৃথিবীর কোন প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা শুরু করেই লাভ জনক প্রতিষ্ঠান হয়? ইভ্যালির বয়স ছিল মাত্র তিন বছরেরও কম। এই সময় একটি কোম্পানি প্রচার-প্রসারের সময়। কোম্পানি তার নাম প্রচার করে গ্রাহক প্রসার করবে। এটাই একটি স্টার্টআপ কোম্পানি ধর্ম। প্রচার-প্রসারে কোম্পানির ব্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করে তার শেয়ার বিক্রয় কিংবা বিনিয়োগ নিয়ে আসবে।

একটু চিন্তা করলে বুঝা যায়,  দেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি যখন প্রচার-প্রসার করে বিনিয়োগ সম্ভাব্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ঠিক তখনই তাকে বন্ধ করার নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। কৌশল অবলম্বন বা পরিকল্পনা কারীরা ঠিকই সফলতা পেয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য গ্রাহক, সেলার কিংবা সরকার নয়। যদি তাই হতো গত ৬ মাসে কেন কোন গ্রাহক, সেলারের বিন্দুমাত্র উপকার করতে পারে নাই? 

বহির্বিশ্বের পরীক্ষিত এস্ক্রো সিস্টেম চালু করেছে ই-কমার্স গ্রাহকেদের স্বার্থে। কিন্তু ম্যানুয়েল এই পদ্ধতি চালু করে কত টুকু গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে? এস্ক্রো সিস্টেম অবশ্যই কিছু কোম্পানির প্রতারণা থেকে গ্রাহকের টাকা রক্ষা করতে পেরেছে। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ে ইতি মধ্যে গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন গ্রাহকের টাকা এস্ক্রোতে আছে, কার পন্য ডেলিভারি হয় নাই কে টাকা ফেরত পাবে, এই বিষয় গুলা বানিজ্য মন্ত্রনালয় দেখবে কেন? এই বিষয় দেখবে গেটওয়ে কোম্পানি, যারা এস্ক্রো সিস্টেমে টাকা আদান-প্রদান করছে। পন্য নির্দিষ্ট সময় ডেলিভারি দিতে পারলে, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে গেটওয়ে কোম্পানি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিয়ে দিবে। নির্দিষ্ট সময় পন্য ডেলিভারি না দিতে পারলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে গেটওয়ে থেকে টাকা গ্রাহকের কাছে চলে যাবে। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশে  ম্যানুয়েল পদ্ধতি চালু করা, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সাথে সাংঘর্ষিক। গত সাত-আট মাসেও এস্ক্রো স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করা হয় নাই। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে দ্রুত এস্ক্রো সিস্টেম স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চাই।

অনেকে অভিযোগ করছে ইভ্যালির সিইও জনাব রাসেল  অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এটি সন্দেহাতীত অভিযোগ মাত্র। গত দেড় বছরেও কেউ এই অভিযোগ প্রমাণিত করতে পারে নাই।  সরকার কিংবা সরকারি কোন সংস্থাও সরাসরি কোনো অভিযোগ আনতে পারে নাই। তাই শুধু মাত্র সন্দেহাতীত অভিযোগের জন্যই বাংলাদেশের লিডিং ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালিকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে? 

ইভ্যালি বা জনাব রাসেল যদি অর্থ পাচার করার ইচ্ছে থাকতো, তবে  তার জন্য সাইক্লোনের এক মাসের অফারে যে অর্ডার আসতো সেই পরিমান টাকাই যথেষ্ট ছিলো। কিন্তু সে তা না করে, ম্যানুয়েল এস্ক্রো সিস্টেমের দড়ি গলায় নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছিলেন। এমনকি তিনি সর্বপ্রথম এস্ক্রো সিস্টেমকে স্বাগত জানিয়ে ছিলেন। যখন এস্ক্রো সিস্টেমে গ্রাহক বিন্দুমাত্র প্রতারিত হওয়ার সুযোগ ছিলনা, ঠিক ওই সময় কেন তাদের বন্দী করা হলো? তাও আজ দীর্ঘ ছয় মাস কারা বন্দী আছে কোন প্রকার অভিযোগ প্রমাণ হবার পূর্বেই। 

কিছু দিন আগে বাদীর আপত্তি না থাকা সত্বেও জামিন চাইলে আদালত নামঞ্জুর করেন ইভ্যালির রাসেল দম্পতির মামলার৷ লক্ষ লক্ষ গ্রাহক ও হাজার হাজার সেলার ইভ্যালির রাসেল দম্পতির উপর আস্থা রেখেছে। তারা তাদের জিম্মায় ইভ্যালির রাসেল দম্পতির মুক্তি চায়

ইভ্যালির গ্রাহক-সেলার সকলেই বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল। সামান্য কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনাব রাসেল ও শামীমা নাসরিন এখন জেলে। কিছু মামলায় জামিন হলেও বাকী কিছু মামলা থাকার কারনে তারা মুক্তি পাচ্ছে না, তাই ইভ্যালির লক্ষ লক্ষ ভোক্তা ও হাজার হাজার মার্চেন্ট আজ পথে বসার উপক্রম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এবং মাননীয় বিচারিক আদালতের নিকট ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছে ইভ্যালির গ্রাহক-সেলারা। ইভ্যালির রাসেল দম্পতির মুক্তি হলে আমরা লক্ষ লক্ষ ভোক্তা মার্চেন্টের স্বার্থ রক্ষা হবে।

Rate this post
Exit mobile version