ইভ্যালি-ই হতে পারে বাংলার আমাজন, অপেক্ষা শুধু সময়ের
ইভ্যালি-ই হতে পারে বাংলার আমাজন, অপেক্ষা শুধু সময়ের
বহুল আলোচিত সমালোচিত ইভ্যালি খুব কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ই- কমার্স জগতে এক বিরাট জায়গা করে নিয়েছিলো । আমাদের মনে প্রথম যে ভাবনা টা আসে, ইভ্যালি কি করে এতো কম দামে পণ্য বিক্রি করে? কিভাবে এতো ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করে?
এর পিছনে কয়েক টা যুক্তি দেওয়া যেতে পারে,
ইভ্যালির রাসেল সাহেব যে পণ্য বিক্রি করে তা সরাসরি উৎপাদক থেকে ভোক্তার নিকট সরবরাহ করে। সুতরাং এখানে মধ্যস্থতা হিসেবে যারা লাভবান হয় তারা সে সুযোগ পায়না, এখানে ভোক্তার কিছু উপকার হয়। এক সাথে অনেক পন্য নেওয়ায় দাম কিছুটা কমে পায়।
ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক, লোভনীয় অফার আপনি যাই বলেন কাস্টমার বেইজ প্লাটফর্ম এ আপনাকে এসব ছাড়া আকর্ষন করবে না। অফার বেইজ প্লাটফর্মে জন্য ধীরে ধীরে কাস্টমারদের হ্নদয়ে তারা জায়গা করে নিতে শুরু করছে। ইভ্যালি যখন প্রায়োরিটি স্টোর চালু করলো, সব প্রাইস রেগুলার এম আর পি তে ছিলো। সেখানে নিশ্চয় একটা লাভের জায়গা আছে। এভাবে ইভ্যালি একটা বিনিয়োগ নেওয়ার সিচুয়েশনে আসছিলো।
ইভ্যালি প্রথম ধাপে তার বাইকে লস গেলেও অন্য প্রোডাক্ট এ সেটা রিকোভার হয়ে যায়।কাস্টমার বেইজ বিজনেসে কোম্পানির নাম ছড়ানোর জন্য এইটা সবার মূল লক্ষ্য থাকে। আপনারা জেনে থাকবেন আমাজন, উবার এদের নিজস্ব কোনো প্রডাক্ট নাই। তারা প্রডিউসার আর কনজুমার এর মাঝে সম্পর্ক তৈরী করে দেয়। তারা প্রথম ধাপে ডিসকাউন্ট না দিলে কোম্পানির থেকে কেও কোনো কিছু কিনবেনা, আর না কিনলে তো আমরা তার প্রতি আস্থা তৈরী করতে পারবোনা।
রাসেল সাহেব বাংলাদেশের ই-কমার্স জগতে একটা মডেল, তিনি সব ধরনের কোম্পানির সাথে সমঝোতার মাধ্যমে ইভ্যালির আওতায় আনার ব্যবস্থা করছিলেনিনের। আমরা জানি এপল ওয়ার্ল্ডওয়াইড একটা সুনামধন্য কোম্পানি তবুও আইফোনের ব্যাটারি চার্জ কম থাকার ব্যাপারে হাজারো অভিযোগ, ইভ্যালির ক্ষেত্রেও বিষয় টা এমনি।
অনেকেই ইভ্যালিকে পঞ্জিস্কিমের সাথে তুলনা করতেছেন। আপনার পাড়ার দোকানে দোকানি কি করে? সে যে মহাজন এর থেকে মালামাল আনে সেটার কি পুরো টাকা শোধ করে? প্রথমে ২০ টাকা দিয়ে ৫০ টাকার মাল নিয়ে আসে, আবার পেইড করে ১০০ টাকার মাল নিয়ে আসে তাহলে কি এইটা পঞ্জি স্কিম এর মধ্যে ফেলবেন?
রাসেল সাহেব তো একটা পজিটিভ চিন্তাধারার মধ্যে এগোচ্ছে। সে তো ৫০০০ কোটি টাকার অর্ডার ডেলিভারি করছে, তার যদি হারানোর পালানোর বিন্দু পরিমান ইচ্ছে থাকতো তাহলে এতো দূর আসতোনা। রাসেলের মাঝে ফল্ট(ঝামেলা) কিছু থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক এক মাস একাউন্ট ফ্রিজ করে পরে খুলে দিতোনা। এমএলএম এর ব্যাপারে এতো কনফিডেন্টলি রাসেল সাহেব বলতে পারতোনা। এস্ক্রো সিস্টেম করে গ্রাহকদের উপকার করার বদলে আনছে হয়রানি আর জটিলতা।
এস্ক্রোর কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হইছে ই-কমার্স যার ফলস্বরূপ ভোগান্তিতে সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতা। এ ব্যাপারে আইসিটি মন্ত্রণালয়, বানিজ্য মন্ত্রণালয় সহো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিকল্প কোনো পন্থা বের করে এই জটিলতা থেকে পরিত্রান করালে ই-কমার্স তথা সাধারণ গ্রাহল উপকৃত হবে।
কোনো আইনী জটিলতা না প্রয়োগ করে সরকারের সার্বিক তত্বাবধানে ইভ্যালিকে রাসেল সাহেবের আওতাভুক্ত করলেই কেবলমাত্র শুধুমাত্র গ্রাহকদের পাওনা মেটানো সম্ভব অন্যথায় আর কারো দ্বারা এইটা লিকুইডেশন এর আওতায় আনা সম্ভব না। রাসেল বাচলে বাচবে ইভ্যালি, চালু হবে গ্রামের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত জানা ই-কমার্স ”ইভ্যালি”। বাচবে বাংলার হাজারো যুবক, স্বপ্ন পুরন হবে আমাদের লাখো তরুনের।
স্বাধীনতার স্থপতি, বিজয়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে ‘ইভ্যালি’ এক মাইলফলক হয়ে আমাদের মাঝে বেছে থাকুক, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।
আলমগীর কবির
কৃষি অনুষদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
Rate this post